মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি গোপন চ্যাট গ্রুপের বার্তা ফাঁস হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন কর্মকর্তা একটি এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সামরিক অভিযানের বিস্তারিত তথ্য আদান-প্রদান করেছেন।
এই ঘটনায় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা নিরাপত্তা এবং জবাবদিহিতার প্রশ্ন তৈরি করেছে।
জানা গেছে, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই চ্যাট গ্রুপটি ‘সিগন্যাল’ নামক একটি অ্যাপ ব্যবহার করত। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী, কর্মকর্তারা একটি সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, যেখানে আক্রমণের সময় এবং ব্যবহৃত সরঞ্জাম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিল।
এই ধরনের সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদান সামরিক নিরাপত্তা বিধিনিষেধের গুরুতর লঙ্ঘন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যেমন – পিটার হেগসেথ, এই চ্যাট গ্রুপের সদস্য ছিলেন। ফাঁস হওয়া তথ্য প্রকাশের পর কর্মকর্তারা প্রথমে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, পরে বিস্তারিত তথ্য সামনে আসায় তাদের মিথ্যাচার প্রমাণিত হয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, কর্মকর্তাদের এই ধরনের আচরণ দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কোনো বিদেশি শক্তি বা অন্য কোনো পক্ষ এই তথ্য পেত, তাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারত, যা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারত।
এই ঘটনার জেরে এখন প্রশ্ন উঠেছে, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা একটি অনিরাপদ প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের গোপন আলোচনায় অংশ নিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কর্মকর্তারা সম্ভবত নজরদারির ভয় এড়াতে এই ধরনের মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করতেন। এই ঘটনার পর অনেকেই অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
কারণ, তাদের এমন কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে, তারা হয়তো দেশের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপনীয়তা ভেঙেছেন। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
