নিঃশব্দে বই পড়ার আসর, বিশ্বে পাঠকদের এক নতুন ঠিকানা – সাফল্যের দশ বছর উদযাপন।
বই প্রেমীদের জন্য এক দারুণ খবর! নিঃশব্দে বই পড়ার ক্লাব, যা ‘সাইলেন্ট বুক ক্লাব’ নামে পরিচিত, সম্প্রতি তাদের দশ বছর পূর্তি উদযাপন করলো। এই ক্লাবটি এখন সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে, যেখানে পাঠকেরা একত্রিত হয়ে নীরবে বই পড়েন এবং পরে চাইলে তা নিয়ে আলোচনাও করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরে ২০১২ সালে এই ধারণাটির জন্ম হয়। বন্ধুদের মধ্যে নীরবে বই পড়ার এই মজাদার ধারণাটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় ‘সাইলেন্ট বুক ক্লাব’-এর। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা লরা গ্লুহানিক এবং গুইনেভেরে দে লা মার তাদের এই উদ্যোগের মাধ্যমে বই পড়ার চিরাচরিত ধারণাকে ভেঙে দিয়েছেন।
যেখানে নির্দিষ্ট বই অথবা আলোচনার বাধ্যবাধকতা নেই, সেখানে সবাই তাদের পছন্দের বই নিয়ে এসে অন্যদের সঙ্গে নীরবে সময় কাটান। বই পড়া শেষে সদস্যরা চাইলে তাদের পাঠ অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, যা এটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
বর্তমানে, ক্লাবটির শাখা বিশ্বের ৫৫টিরও বেশি দেশে বিস্তৃত। শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে এর লক্ষাধিক সদস্য রয়েছে। বিখ্যাত লেখক সুসান কেইন এবং জনপ্রিয় উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রের মতো ব্যক্তিত্বও এই ক্লাবের প্রশংসা করেছেন।
ক্লাবটি তাদের সদস্যদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ তৈরি করতে সহায়তা করে এবং একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের একটি সুন্দর মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে।
এই ক্লাবের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন। ক্লাসিক সাহিত্য থেকে শুরু করে, কল্পকাহিনী, এমনকি আত্ম-উন্নয়নমূলক বইও এখানে আলোচনা করা হয়। এই ক্লাবের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, এখানে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়, যারা বই ভালোবাসেন এবং নিজেদের চিন্তা প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
বাংলাদেশেও বর্তমানে বই পড়ার সংস্কৃতি বাড়ছে। বিভিন্ন সাহিত্য উৎসব এবং আলোচনা চক্রের পাশাপাশি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বই নিয়ে আলোচনা বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। ‘সাইলেন্ট বুক ক্লাব’-এর ধারণাটি হয়তো বাংলাদেশের পাঠকদের কাছেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
যারা নীরবে বই পড়তে ভালোবাসেন এবং অন্যদের সঙ্গে তাদের ভালো লাগা ভাগ করে নিতে চান, তাদের জন্য এই ক্লাবটি একটি চমৎকার জায়গা হতে পারে।
প্রতিষ্ঠাতা লরা গ্লুহানিক এবং গুইনেভেরে দে লা মার তাদের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে আরও অনেক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। তাদের মতে, এই ক্লাবটি শুধুমাত্র বই পড়ার একটি জায়গা নয়, বরং এটি একটি মিলন মেলা, যেখানে মানুষজন একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে।
তাই যারা নতুন বন্ধু তৈরি করতে এবং বইয়ের জগতে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চান, তারা এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
তথ্য সূত্র: পিপল