সাওয়ালার মাদক সাম্রাজ্যে: ভয়ঙ্কর কার্টেল সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ!

মেক্সিকোর কুখ্যাত সিনালোয়া কার্টেল: মাদক সাম্রাজ্য ও সন্ত্রাসের ছায়া।

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মাদক সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত সিনালোয়া কার্টেল। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই কার্টেলকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। মাদক ব্যবসা, সহিংসতা, ক্ষমতার লড়াই—এসবের বিস্তার মেক্সিকোর গন্ডি ছাড়িয়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই কারবারিদের প্রধান টার্গেট এখন ফেন্টানিল, যা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকাসক্তির অন্যতম প্রধান কারণ।

সিনালোয়া কার্টেলের উৎপাদিত ফেন্টানিল এতটাই শক্তিশালী যে সামান্য পরিমাণে সেবনেই মৃত্যু হতে পারে। এই মাদক তৈরির মূল উপাদান আসে চীন থেকে, আর তা মেক্সিকোতে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।

সেখানকার কার্টেলগুলো বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সহজে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করতে পারে। মেক্সিকোর সরকার অবশ্য ফেন্টানিল উৎপাদন অস্বীকার করে, তাদের দাবি, সেখানে মূলত মেথামফেটামিন তৈরি হয়।

মেক্সিকোর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যাদের কাজ হলো মাদক পাচার বন্ধ করা।

এর পাশাপাশি, সিনালোয়া রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনী, নৌবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাদক বিরোধী অভিযানে যুক্ত করা হয়েছে। শেইনবাম প্রশাসনের প্রথম ছয় মাসে ১৭ হাজারের বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৪০ টনের বেশি মাদক জব্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে ১.৫ টন ফেন্টানিল ও ২০ লক্ষাধিক ফেন্টানিল ট্যাবলেট।

তবে, মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে লড়াইটা সহজ নয়। কার্টেলগুলো তাদের কার্যক্রম চালানোর জন্য কৌশল পরিবর্তন করছে। তারা ছোট ছোট ল্যাবে দ্রুত ফেন্টানিল তৈরি করে এবং সেনাবাহিনীর নজর এড়িয়ে বিভিন্ন এলাকায় তা পাচার করে।

এমনকি, তারা সেনাদের নজরদারিতে রাখার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অনেক সরকারি কর্মকর্তাও অভিযুক্ত হয়েছেন।

সিনাওয়ার একটি প্রধান শহর কুলিয়াকানে কার্টেলগুলোর মধ্যে প্রায়ই বন্দুকযুদ্ধ হয়। এর ফলে সেখানে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাসে এখানে সহিংসতা বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

শহরের স্কুলগুলোতে শিশুদেরকে বন্দুকযুদ্ধের সময় আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মেক্সিকোর মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপও রয়েছে। তবে, মাদক ব্যবসার বিস্তার এতটাই বেশি যে, এর বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে অনেক তরুণ জীবন হারাচ্ছে। সমাজের এই কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক পরিবার তাদের স্বজনদের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *