সিঙ্গাপুরে আগামী ৩রা মে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, লরেন্স ওয়ং-এর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যিনি গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই রাষ্ট্রপতি থারমান শানমুগারাতনাম, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির জন্য এই নির্বাচন এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়ং বলেছেন, তিনি এই নির্বাচন আয়োজন করছেন, যাতে সিঙ্গাপুরের নাগরিকেরা দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পান।
বর্তমান বিশ্বে অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা বেড়ে চলেছে, এমন পরিস্থিতিতে দেশের জন্য সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি।
সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্টে মোট ৯৭টি আসন রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্বাচনে ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP) আবারও জয়লাভ করতে পারে।
কারণ, দেশটির প্রতিষ্ঠাতা, প্রয়াত লি কুয়ান ইউ-র গড়া এই দলটি ১৯৫৯ সাল থেকে একটানা সরকার পরিচালনা করে আসছে।
যদিও পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP) কখনোই ভোটের ৬০ শতাংশের কম পায়নি, বিরোধী দলগুলো প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলে। তাদের মতে, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থায় কারসাজি করে এবং বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকে।
২০২০ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টি তাদের ইতিহাসে সেরা ফল করে ৯৩টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জয়লাভ করে। সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, এবারের নির্বাচন আগের চেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে।
গত মাসে ‘ইউগভ’ (YouGov) -এর করা এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৪৪ শতাংশ ভোটার এখনো কোনো দল বেছে নেননি। যারা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ পিপলস অ্যাকশন পার্টিকে (PAP) এবং ১৫ শতাংশ ওয়ার্কার্স পার্টিকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের এই নির্বাচন দেশটির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তেমনি জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান জানানোটাও জরুরি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা