সিঙ্গাপুর: এশিয়ার সবচেয়ে সুখী শহর, যেখানে উন্নত জীবনযাত্রার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন শহরের মানুষের জীবনযাত্রার মান নিয়ে গবেষণা করে থাকে ‘ইনস্টিটিউট ফর কোয়ালিটি অফ লাইফ’। তাদের প্রকাশিত ‘হ্যাপি সিটি ইনডেক্স’-এ এবার এশিয়ার সবচেয়ে সুখী শহরের স্বীকৃতি পেয়েছে সিঙ্গাপুর। শুধু এশিয়া মহাদেশেই নয়, এই তালিকায় বিশ্বের সেরা শহরগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশটি।
সুখী জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সূচকের ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন করা হয়। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সবুজ স্থান, শক্তিশালী অর্থনীতি এবং সুসংহত সমাজ ব্যবস্থা—এসব কিছুই একটি শহরের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
ইনস্টিটিউট ফর কোয়ালিটি অফ লাইফ জানাচ্ছে, তারা এমন শহরগুলোকে স্বীকৃতি দেয়, যারা শিক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি, অর্থনীতি, গতিশীলতা, পরিবেশ সুরক্ষা, সবুজ স্থান এবং উদ্ভাবনের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়। এই বিষয়গুলো কেবল নীতি-নির্ধারণের অংশই নয়, বরং শহরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক বিভিন্ন পদক্ষেপের বাস্তবায়নেও দৃশ্যমান।
সিঙ্গাপুরের সাফল্যের মূল কারণগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশটির উন্নত জীবনযাত্রার পেছনে রয়েছে শক্তিশালী অর্থনীতি, সুশাসন এবং আধুনিক নগরায়নের এক দারুণ সমন্বয়। এখানকার সরকার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ডেটা উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উদাহরণস্বরূপ, জনসাধারণের জন্য তারা ৮,০৮৬টি ডেটা সেট সরবরাহ করে থাকে। উন্নত স্বাস্থ্যসেবার কারণে সিঙ্গাপুরের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৮৩ বছর। এখানে প্রতি ১,০০০ জনে প্রায় ২.৮ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
সবার জন্য স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করার ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজলভ্য ও কার্যকরী হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সংস্কৃতিও বেশ সমৃদ্ধ। প্রায় ৫৯ লক্ষ মানুষের আবাসস্থল এই শহরে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের বসবাস। এখানকার খাদ্য সংস্কৃতিতে রয়েছে ভিন্নতার ছোঁয়া।
উন্নত মানের হোটেল এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা বিমানবন্দরও সিঙ্গাপুরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পরিচ্ছন্নতার দিক থেকেও সিঙ্গাপুর একটি আদর্শ শহর।
তবে সুখী শহরের এই তালিকায় সিঙ্গাপুরের পরেই রয়েছে কোপেনহেগেন। শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এই শহরটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।
সবুজ পরিবহনে কোপেনহেগেন একটি অগ্রণী শহর, যেখানে ৬৯% মানুষ পরিবেশবান্ধব উপায়ে ভ্রমণ করে। সুইজারল্যান্ডের জুরিখ এবং ডেনমার্কের আরহাউস ও বেলজিয়ামের আন্টওয়ার্পও এই তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরও এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। নিউইয়র্ক সিটি এবং মিনিয়াপোলিস ‘গোল্ড’ খেতাব অর্জন করেছে।
এছাড়া, সান দিয়েগো, ওয়াশিংটন, ডি.সি., সল্ট লেক সিটি, কলম্বাস, লস অ্যাঞ্জেলেস, সিয়াটল, বাল্টিমোর, সান আন্তোনিও এবং ন্যাশভিল ‘সিলভার’ স্বীকৃতি পেয়েছে।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার