সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP) বিপুল জয়লাভ করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং এই জয়ে ভোটারদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট সমর্থন পেয়েছেন।
রবিবার প্রকাশিত সরকারি ফলাফলে দেখা যায়, ৯৭ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ৪৯টি আসন পেরিয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দল।
প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং এই জয়কে জনগণের প্রতি সম্মান জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এবং মার্কিন শুল্কের মতো বিষয়গুলো মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই জয় তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সিঙ্গাপুরের দীর্ঘদিনের শাসক দল হিসেবে পরিচিত পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP)। দলটি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখলেও ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগে মাঝে মাঝে সমালোচিত হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে দলটি শক্তিশালী বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া লরেন্স ওংয়ের জন্য এটি ছিল প্রথম বড় পরীক্ষা।
নির্বাচনে প্রধান ইস্যুগুলোর মধ্যে ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা। লরেন্স ওং মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই তিনি দেশের অর্থনীতিকে উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক রাখতে গুরুত্ব দিয়েছেন।
বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টি (WP) তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেছিল। তারা মনে করে, আরও বেশি বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য থাকলে পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP)-কে একচেটিয়াভাবে কাজ করতে দেওয়া হতো না।
তবে, পিপলস অ্যাকশন পার্টি (PAP) ভোটারদের কাছে তাদের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেছে, যার মধ্যে ছিল নগদ অর্থ বিতরণ এবং খাদ্য ভাউচারের মাধ্যমে নাগরিকদের সহায়তা করা।
নির্বাচনের আগে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি হসিয়েন লং এবং তার ভাইয়ের মধ্যে একটি পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়, যা জনসাধারণের মধ্যে আলোচনার জন্ম দেয়। এছাড়াও, দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক একজন মন্ত্রীকে জেলে যেতে হয়।
সিঙ্গাপুরের এই নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য সরাসরি কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং প্রবাসী শ্রমিকদের উপর কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের এই জয় দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তথ্য সূত্র: The Guardian