ডজার্স: স্প্যানিশে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সাহস দেখালেন নেজা!

লস অ্যাঞ্জেলেস ডজর্স-এর একটি বেসবল ম্যাচে মার্কিন জাতীয় সঙ্গীতটি স্প্যানিশ ভাষায় গাওয়ার কারণে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গায়িকা নেজা, যাঁর আসল নাম ভ্যানেসা হার্নান্দেজ, গত ১৪ই জুন খেলা শুরুর আগে ‘এল পেন্ডন এস্ট্রেলাডো’ শিরোনামের গানটি পরিবেশন করেন।

জানা যায়, খেলা শুরুর আগে ডজর্স কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেজাকে জাতীয় সঙ্গীতটি ইংরেজিতে গাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তার প্রতিবাদস্বরূপ স্প্যানিশ ভাষায় গানটি গেয়ে শোনান।

পরবর্তীতে, টিকটকে একটি ভিডিওতে নেজা লেখেন, “দেখুন, ডজর্স আমাকে স্প্যানিশ ভাষায় ‘স্টার স্প্যাঙ্গেলড ব্যানার’ গাইতে নিষেধ করছে, অথচ রুজভেল্ট (President Roosevelt) ১৯৪৫ সালে এর অনুমোদন দিয়েছিলেন।”

নেজা আরও ব্যাখ্যা করেন যে, ১৯৪৫ সালে তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর, প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের ‘গুড নেইবার পলিসি’র অংশ হিসেবে ল্যাটিন আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার উদ্দেশ্যে এই স্প্যানিশ সংস্করণটির অনুমোদন দেয়। পেরুভিয়ান-আমেরিকান সুরকার ক্লোটিল্ডে আরিয়াস এই গানের কথাগুলো লিখেছিলেন।

নেজা জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল, তাই তিনি এই গানটি গাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “আমি অনেকবার জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছি, কিন্তু আজকের দিনটা ছিল অন্যরকম।

আমি এটা করতে চেয়েছিলাম, কারণ এটা আমার মানুষের প্রতি ভালোবাসা।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এটা করতে পেরে গর্বিত, কারণ আমার বাবা-মা অভিবাসী।”

ডজর্স কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের এক কর্মকর্তার মতে, এই ঘটনার জন্য নেজাকে কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি এবং ভবিষ্যতে তাকে আবার স্টেডিয়ামে স্বাগত জানানো হবে।

এই ঘটনার পরে, লস অ্যাঞ্জেলেস ডজর্সের খেলোয়াড় কাইক হার্নান্দেজ এবং লস অ্যাঞ্জেলেস সকার দল অ্যাঞ্জেল সিটি এফ.সি. অভিবাসীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। কাইক হার্নান্দেজ তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, “আমি হয়তো এখানে জন্মাইনি, তবে এই শহর আমাকে আপন করে নিয়েছে।

আমি আমাদের দেশে এবং শহরে যা ঘটছে, তাতে দুঃখিত এবং ক্ষুব্ধ।” অ্যাঞ্জেল সিটি এফ.সি.-এর খেলোয়াড়রা তাদের খেলায় ‘ইমিগ্রান্ট সিটি ফুটবল ক্লাব’ লেখা টি-শার্ট পরে মাঠে নেমেছিল।

এই ঘটনাটি ভাষার অধিকার এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতি সম্মান জানানোর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষার মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *