যুক্তরাষ্ট্রে ‘সিনার্স’-এর বাজিমাত, পেছনে ফেলল ‘মাইনক্রাফট’
হলিউডের সিনেমার বাজার এখন অনেকটাই পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। সিনেমার নির্মাতা বা অভিনয়শিল্পীর চেয়ে পরিচিত নামটাই যেন এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে, সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সিনার্স’ সিনেমাটি সেই ধারণাকে খানিকটা হলেও পাল্টে দিয়েছে।
পরিচালক রায়ান কুগলারের এই সিনেমাটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে, পেছনে ফেলেছে জনপ্রিয় ‘মাইনক্রাফট’কে। সিনেমাটিতে যমজ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাইকেল বি. জর্ডান।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ‘সিনার্স’ আয় করেছে প্রায় ৪৫.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওয়ার্নার ব্রাদার্স-এর ব্যানারে নির্মিত এই সিনেমাটির নির্মাণ খরচ ছিল প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার।
পরিচালক কুগলার এর আগে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ এবং ‘ক্রিড’-এর মতো দর্শকপ্রিয় সিনেমা নির্মাণ করেছেন। ‘সিনার্স’-এর গল্প ১৯৩২ সালের মিসিসিপির প্রেক্ষাপটে নির্মিত, যেখানে দুই ভাই তাদের নিজ শহরে একটি জুক জয়েন্ট (অনানুষ্ঠানিক নাইটক্লাব) খোলে।
অন্যদিকে, ‘মাইনক্রাফট’ সিনেমাটি মুক্তির তৃতীয় সপ্তাহে ৪১.৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই সাফল্যের ফলে ওয়ার্নার ব্রাদার্স-এর ঝুলিতে জমা হয়েছে দুটি সফল সিনেমা।
এর মধ্যে একটি মৌলিক গল্পের সিনেমা এবং অন্যটি জনপ্রিয় একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ। ‘মাইনক্রাফট’ সিনেমাটি ওয়ার্নার ব্রাদার্স এবং লেজেন্ডারি পিকচার্সের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে।
মুক্তির তিন সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির আয় দাঁড়িয়েছে ৭২০.৮ মিলিয়ন ডলার।
ওয়ার্নার ব্রাদার্স মোশন পিকচার গ্রুপের কো-চেয়ার, পাম অ্যাবডি এবং মাইক ডি লুকা, সিনেমা দুটির এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
তাদের মতে, সিনেমা দর্শকদের অন্য এক জগতে নিয়ে যেতে পারে। ‘সিনার্স’ সিনেমার সাফল্যে নির্মাতারা এতটাই খুশি যে, পরিচালক রায়ান কুগলারকে সিনেমাটির ব্যবসার একটা অংশ দেওয়ার পাশাপাশি ২৫ বছর পর এর মালিকানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘সিনার্স’-এর সাফল্যের পেছনে অন্যতম কারণ হল সিনেমাটির গল্প ও নির্মাণশৈলী। সমালোচকরা সিনেমাটিকে ৯৮ শতাংশ ‘তাজা’ রেটিং দিয়েছেন।
দর্শকদেরও সিনেমাটি বেশ পছন্দ হয়েছে, সিনেমা হলে টিকিট কেনার সময় দর্শকদের দেওয়া রেটিংয়েও (CinemaScore) সিনেমাটি ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে সিনেমাটি কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। ৭১টি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সিনেমাটি ১৫.৪ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমাটি বিভিন্ন শ্রেণির দর্শকের কাছে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ৩৫ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, ১৮ শতাংশ হিস্পানিক এবং ৫ শতাংশ এশীয় দর্শক রয়েছেন।
এই মুহূর্তে বক্স অফিসের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দ্য কিং অফ কিংস’, যা ইস্টার উইকেন্ডের সুযোগ নিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৭.৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
এছাড়া, ‘দ্য অ্যামেচার’, ‘ওয়ারফেয়ার’, ‘ড্রপ’, ‘কালারফুল স্টেজ: দ্য মুভি’, ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ (২০০৫), ‘দ্য চোজেন: লাস্ট সাপার’ এবং ‘স্নো হোয়াইট’-এর মতো সিনেমাগুলোও দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সিনেমার ব্যবসার এই চিত্র প্রমাণ করে, ভালো গল্পের সিনেমা এখনো দর্শককে হলমুখী করতে পারে।
বিশেষ করে যখন সিনেমার গল্প বলার ধরন হয় আকর্ষণীয় এবং অভিনয়শিল্পীরা থাকেন স্বমহিমায়।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।