নারীদের রাগবি: আসন্ন ‘সিক্স নেশনস’ টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের আধিপত্যের চ্যালেঞ্জ
আসন্ন ‘নারীদের সিক্স নেশনস’ রাগবি টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এবারের আসরে ইংল্যান্ডের দল তাদের টানা সপ্তম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামছে, তবে তাদের পথ মোটেও সহজ হবে না।
অন্যান্য দলগুলোও তাদের হারিয়ে ট্রফি ছিনিয়ে নিতে প্রস্তুত। এই টুর্নামেন্ট শুধু একটি শিরোপার লড়াই নয়, বরং বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারী রাগবি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
ইংল্যান্ড নারী রাগবি দল দীর্ঘদিন ধরেই এই টুর্নামেন্টে দারুণ পারফর্ম করে আসছে। ২০১৯ সাল থেকে তাদের খেলোয়াড়দের পেশাদার চুক্তি দেওয়ার ফলে দলটির খেলায় এসেছে ভিন্নতা, যা তাদের সাফল্যের অন্যতম কারণ।
এখন পর্যন্ত তারা ‘সিক্স নেশনস’-এ একটিও ম্যাচ হারেনি। এমনকি, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ইতালির বিপক্ষে জয় পেলে তারা টানা ৩০টি ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়বে।
তবে, ইংল্যান্ডের এই একচেটিয়া আধিপত্যের ধারা কি বজায় থাকবে? নাকি কোনো অঘটন ঘটবে? অনেকের মতে, কোনো ম্যাচে হারলে তা দলের জন্য বিশ্বকাপে ভালো ফল করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
কারণ, পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে খেলোয়াড়রা নিজেদের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ জেতার আগে ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের কাছে একটি টেস্ট সিরিজ এবং ফ্রান্সের কাছে ‘সিক্স নেশনস’ টুর্নামেন্টে হেরেছিল।
সেই সময় পরাজয়গুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে দল বিশ্বকাপের ফাইনালে ভালো পারফর্ম করতে পেরেছিল।
অন্যদিকে, ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় ক্লাউদিয়া ম্যাকডোনাল্ড মনে করেন, দলের ভালো পারফর্ম করার জন্য হার অপরিহার্য নয়।
মাঠের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেদের সামলে নিতে হয়, সে বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
যদি কোনো দল ইংল্যান্ডকে হারাতে পারে, তবে তাদের মধ্যে আয়ারল্যান্ড অথবা ফ্রান্স অন্যতম। গত বছর আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও, তারা এখন দারুণ ফর্মে রয়েছে।
বিশেষ করে, সম্প্রতি তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। আয়ারল্যান্ডের কোচ স্কট বেমন্ড মনে করেন, তাদের দল এখন অন্য দলগুলোর কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এবং এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপে ভালো ফল করাই তাদের লক্ষ্য।
ইংল্যান্ডের বাইরে স্কটল্যান্ড, ইতালি এবং ওয়েলসও ভালো করার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। স্কটল্যান্ডের কোচ ব্রায়ান ইএসন দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, যা তাদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
অন্যদিকে, ইতালি এবং ওয়েলসের দল নতুন কোচের অধীনে খেলছে।
এবারের টুর্নামেন্টে কিছু নতুন নিয়ম যোগ করা হয়েছে, যা পুরুষদের টুর্নামেন্টের মতোই।
এর মধ্যে রয়েছে ২০ মিনিটের জন্য খেলোয়াড়দের লাল কার্ড এবং কিক করার জন্য ৬০ সেকেন্ড ও স্ক্রাম ও লাইনআউটের জন্য ৩০ সেকেন্ড সময়সীমা।
এছাড়া, টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যকার খেলায় স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি নতুন রেকর্ড গড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, নারীদের রাগবিতে এই বছরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হতে যাচ্ছে। এই টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরেই অনুষ্ঠিত হবে নারী রাগবি বিশ্বকাপ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান