ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। প্রস্তাবটিতে ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার আয় কমানোর উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নিতে চাইছে ইইউ।
বুধবার প্রকাশিত খবরে জানা যায়, স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই পরিকল্পনা তার দেশের জন্য “একেবারেই অগ্রহণযোগ্য”। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এর ফলে গ্যাসের দাম বাড়বে এবং স্লোভাকিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্লোভাকিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ চুক্তি ২০৩৪ সাল পর্যন্ত বহাল আছে। ফিকো জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি কার্যকর হলে তিনি ক্ষতিপূরণ চাইবেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন দের লেয়েন ইইউ আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, রাশিয়া নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহকারী নয়, তা তারা বারবার প্রমাণ করেছে। তিনি আরও বলেন, “রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা আমাদের নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। আমাদের জ্বালানির দাম কোনো ‘শত্রু প্রতিবেশী’ নির্ধারণ করতে পারে না।”
ফন দের লেয়েনের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফিকো রাশিয়ার তেল ও পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি বন্ধের প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছেন।
উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার নেতারা পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং তাঁরা অতীতে ইউক্রেনকে ইইউ-এর সামরিক সহায়তা প্রদানে বাধা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফিকোর এই সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্যের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই রুশপন্থী হিসেবে পরিচিত এবং ইউক্রেন ইস্যুতে ইইউ-এর নীতির বিরোধিতা করে আসছেন।
এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আগামী শুক্রবার তিনি মস্কো যাওয়ার কথা রয়েছে। ডিসেম্বরের পর এটি হবে তাঁর দ্বিতীয় মস্কো সফর।
স্লোভাকিয়ার অভ্যন্তরেও ফিকোর রুশপন্থী নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্লোভাকিয়ার এই পদক্ষেপ ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস