বিখ্যাত মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী এবং “সly অ্যান্ড দ্য ফ্যামিলি স্টোন”-এর প্রধান শিল্পী স্লাই স্টোন ৮২ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর পরিবার সোমবার এই দুঃখজনক খবরটি জানায়।
সত্তরের দশকে তাঁর সৃষ্টি করা ফানক এবং রক ঘরানার গানগুলি সঙ্গীতের জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিল। সঙ্গীতের জগতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়।
স্লাই স্টোন, যাঁর আসল নাম ছিল সিলভেস্টার স্টুয়ার্ট, টেক্সাসের ডেন্টনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন সঙ্গীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
তাঁর গানগুলি কেবল শ্রুতিমধুর ছিল না, বরং সামাজিক সচেতনতা এবং মানবতার বার্তা বহন করত। “ড্যান্স টু দ্য মিউজিক”, “হট ফান ইন দ্য সামারটাইম”, এবং “ফ্যামিলি অ্যাফেয়ার”-এর মতো কালজয়ী গানগুলি আজও সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
তাঁর গানের মাধ্যমে তিনি সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছিলেন, যা আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।
স্লাই-এর সঙ্গীতজীবন শুরু হয় ছোটবেলাতেই। তিনি এবং তাঁর ভাইবোনরা মিলে “স্টুয়ার্ট ফোর” নামে একটি গসপেল সঙ্গীত দল গঠন করেন।
কৈশোরে তিনি বিভিন্ন ব্যান্ডে পারফর্ম করতেন এবং এর মাধ্যমেই সঙ্গীতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরো গভীর হয়। পরবর্তীকালে, তিনি রেডিওতে ডিজে হিসেবে কাজ করা শুরু করেন, যেখানে তাঁর ব্যতিক্রমী রুচি শ্রোতাদের মন জয় করে।
১৯৬৭ সালে স্লাই অ্যান্ড দ্য ফ্যামিলি স্টোন গঠিত হয়। এই ব্যান্ডটি বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির মানুষের সংমিশ্রণে গঠিত ছিল, যা সেই সময়ের সঙ্গীত জগতে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল।
ব্যান্ডের গানগুলি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং সঙ্গীত জগতে এক নতুন ধারার জন্ম দেয়।
স্লাই স্টোনের জীবন ছিল উত্থান-পতনে ভরা। খ্যাতি এবং সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছানোর পরে তিনি ব্যক্তিগত জীবনে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন।
মাদকাসক্তি এবং স্বাস্থ্যগত জটিলতা তাঁর জীবনকে কঠিন করে তোলে। যদিও তিনি একসময় লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গীত আজও বেঁচে আছে।
তাঁর সৃষ্টিশীলতা এবং সঙ্গীতের প্রতি উৎসর্গীকৃত মনোভাব তাঁকে কিংবদন্তিতে পরিণত করেছে।
১৯৯৩ সালে স্লাই স্টোনকে রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেইমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁর পরিবার শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তাঁদের প্রিয়জনের প্রয়াণে তাঁরা গভীরভাবে শোকাহত।
তাঁরা ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি তিনি তাঁর জীবন নিয়ে একটি চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন এবং তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর জীবনের অজানা দিকগুলো তুলে ধরেছে। তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো, তবে তাঁর গান চিরকাল মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন