মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে স্নাইপার হামলার ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, বলছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অনলাইনে ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিস্তার এবং সহজে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার সুযোগ এই ধরনের হামলার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, যা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, গত মাসে উটাহ অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কনজারভেটিভ অ্যাক্টিভিস্ট চার্লি কার্ক একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় এক স্নাইপার হামলা চালায়।
সৌভাগ্যবশত, কার্কের নিরাপত্তা দল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। এছাড়া, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে একটি ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অফিসের বাইরে এক ব্যক্তি রাইফেল দিয়ে গুলি চালালে একজন নিহত এবং দুইজন গুরুতর আহত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইনে ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের বিস্তার এই ধরনের হামলাকারীদের উৎসাহিত করছে। দ্রুত চরমপন্থী হয়ে ওঠা এবং সহিংসতার পথে পা বাড়ানো একটি উদ্বেগের বিষয়।
তাদের মতে, স্নাইপাররা দূর থেকে আঘাত হানতে পারে, যা সনাক্ত করা কঠিন এবং এর মোকাবিলা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং।
স্নাইপার হামলার হুমকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এখন তাদের শুধু সরাসরি হামলার মোকাবেলা করলেই চলবে না, বরং দূর থেকে আসা হুমকির বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির জনসমক্ষে আসার আগে সম্ভাব্য সব ঝুঁকি খতিয়ে দেখা জরুরি। এর মধ্যে ভবনের ছাদগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা এবং ঘটনার স্থানটিকে নিরাপদ করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।
এই পরিস্থিতিতে রাজনীতিবিদ এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য ইনডোর অনুষ্ঠান বেশি নিরাপদ হতে পারে। কারণ, সেখানে আগত ব্যক্তিদের মেটাল ডিটেক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা সহজ।
এছাড়া, সরকারি সংস্থাগুলোকেও তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে, সরকারি অফিসের নিরাপত্তা কর্মীদের রাইফেল ও দূর থেকে আক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী বক্তব্য কমানো জরুরি। ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের বিস্তার বন্ধ করতে না পারলে, ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন