মৃত ঘোষণার পর জীবিত প্রমাণ: বৃদ্ধের লড়াই, সোশ্যাল সিকিউরিটির বিরুদ্ধে

**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা: সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগে এক বৃদ্ধের বিড়ম্বনা**

যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগ (Social Security Administration বা SSA) নামের একটি সরকারি সংস্থা ৮২ বছর বয়সী নেড জনসনকে মৃত ঘোষণা করে। ফলে, জীবিত নেড-কে প্রমাণ করতে হয়েছে যে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে জীবিত আছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে সিয়াটলে, যেখানে নেড-এর বসবাস। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে প্রমাণ দিতে ব্যস্ত যে তিনি একজন জীবিত মানুষ।

নেড-এর স্ত্রী পামেলা জানান, প্রথমে বিষয়টি তাঁরা তেমন গুরুত্ব দেননি। তাঁদের মনে হয়েছিল, কেউ হয়তো মজা করছে।

কিন্তু যখন তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হতে শুরু করলো, তখন তাঁরা হতবাক হয়ে যান। নেড-এর সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার (Social Security checks) চেক আসা বন্ধ হয়ে যায় এবং তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে কিছু টাকা কেটে নেওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নেড-কে মৃত ঘোষণা করার কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি বেশ অদ্ভুত ছিল। কারণ, তিনি তো আমার পাশেই বসে কফি খাচ্ছিলেন!

পামেলা

নেড জানান, SSA ব্যাংককে জানিয়েছিল তাঁর মৃত্যুর তারিখ, যা ছিল ২০২৩ সালের ২৩শে নভেম্বর। এর পরেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁদেরকে জানায়, নেড-এর মৃত্যুর কারণে তারা দুঃখিত।

বিষয়টি নিয়ে নেড-এর মনে কিছু সন্দেহ দানা বাঁধে। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্যের সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকতে পারে।

ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, SSA-এর মাধ্যমে অনেক মৃত ব্যক্তিও ভাতা তুলছেন।

নেড-এর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কাছে SSA থেকে একটি ইলেকট্রনিক বার্তা এসেছিল। সেই বার্তার ভিত্তিতেই তাঁরা নেড-এর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এটাও জানায়, SSA-এর সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো সরাসরি উপায় নেই।

অবশেষে, নেড জনসন তাঁর জীবিত থাকার প্রমাণ নিয়ে সিয়াটলের SSA অফিসে যান। সেখানে প্রায় আট ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে সক্ষম হন।

পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখানোর পর তাঁর ভাতা পুনরায় চালু হয়।

তবে, নেড-এর দুশ্চিন্তা এখনো কাটেনি। কারণ, তাঁর স্বাস্থ্য বীমা এবং Medicare পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

সৌভাগ্যবশত, সেগুলো তিনি আবার ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু তিনি আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে বিদেশ ভ্রমণে গেলে তাঁর পাসপোর্টের সমস্যা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, প্রতি বছর তারা প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর খবর পায়।

এর মধ্যে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে ভুল হয়। যদিও এই ভুলের সংখ্যা খুবই কম, তবুও এর শিকার হওয়া মানুষদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

নেড জনসনের ঘটনাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সরকারি অফিসের কর্মীদের গাফিলতির কারণে সাধারণ মানুষ কতটা অসহায় হয়ে পড়তে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *