সোস্যাল সিকিউরিটির ভুলে ‘মৃত’ ঘোষণা, জীবিত মানুষের কান্না!

যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগে জীবিত মানুষজনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করার কারণে জটিলতা বাড়ছে। সম্প্রতি, এই বিভাগের কর্মীরা তাদের ডেটাবেজে ভুল সংশোধন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। মূলত, সরকারি কিছু পদক্ষেপের কারণে এই সমস্যা বেড়েছে, যেখানে বয়স্ক ব্যক্তিদের মৃত্যুর তারিখ আপলোড করা হচ্ছে।

ফলস্বরূপ, জীবিত মানুষজন তাদের সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং চরম আর্থিক কষ্টের শিকার হচ্ছেন।

জানা গেছে, মার্কিন সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (Department of Government Efficiency – DOGE) নামক একটি সংস্থা, যা এলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্কিত, তারা সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগের ডেটাবেজগুলো নিরীক্ষণ করছে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো— যারা বয়স্ক, তাদের মৃত্যুর তারিখগুলো যাচাই করা।

এরই ধারাবাহিকতায়, কয়েক লক্ষ মানুষের ডেটাবেজে মৃত্যুর তারিখ যোগ করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় কিছু গুরুতর ভুল ধরা পড়েছে। অনেক জীবিত মানুষকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে, যার কারণে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

তাদের সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, পেনশন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে এবং ক্রেডিট বিষয়ক জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই ভুলের কারণে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। জর্জিয়ার বাসিন্দা ৭৩ বছর বয়সী জন রেইড থ্রি-এর কথাই ধরা যাক। তাকে মৃত ঘোষণা করার পর, তিনি তার স্বাস্থ্য বীমা এবং পেনশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

শুধু তাই নয়, তাকে প্রমাণ করতে হয় যে তিনি জীবিত আছেন। এর জন্য তাকে একাধিকবার স্থানীয় অফিসে যেতে হয়েছে এবং বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিতে হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংক এবং অন্যান্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তাকে যোগাযোগ করতে হয়েছে।

রইডের মতো আরও অনেকেই এই ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগ স্বীকার করেছে যে, এমন ভুল হচ্ছে এবং তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। তারা তাদের কর্মীদের ‘মৃত্যু সংশোধন’ বিষয়ক মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে।

তবে, এমন ভুলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত এই ধরনের ঘটনা খুব কম ঘটে। কিন্তু বর্তমানে, ভুল করে মৃত ঘোষণার সংখ্যা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেটাবেজ পরিষ্কার করার এই প্রক্রিয়া একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এর ফলস্বরূপ যেনো কোনো নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, একজন মানুষের জীবনযাত্রার উপর এর নেতিবাচক প্রভাব অনেক।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তা করা এবং ভবিষ্যতে এমন ভুলগুলো এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া এখন জরুরি। তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *