সোমারসেটের আকর্ষণ: গ্লাস্টনবারির বাইরেও অনবদ্য অভিজ্ঞতা। যুক্তরাজ্যের অন্যতম সুন্দর অঞ্চল হলো সোমারসেট।
সবুজ পাহাড়, ঐতিহাসিক স্থান আর প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের এক দারুণ মিশ্রণ এই জায়গাটিকে করেছে অসাধারণ। গ্লাস্টনবারি উৎসবের জন্য সোমারসেটের খ্যাতি থাকলেও, এর বাইরেও এখানে ঘুরে আসার মতো অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে, যা হয়তো অনেকেরই অজানা।
আজকের লেখায় আমরা জানবো গ্লাস্টনবারির টিকিট ছাড়াই কিভাবে উপভোগ করা যেতে পারে সোমারসেটের আকর্ষণীয় স্থানগুলো।
সোমারসেটের উত্তরে ব্রিস্টল শহরের কাছাকাছি মনোরম গ্রামীণ দৃশ্য বিদ্যমান। এখানকার মেনডিপ হিলসের চেডার গর্জ যেন যুক্তরাজ্যের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।
এছাড়াও, ইংল্যান্ডের তৃতীয় বৃহত্তম সোমারসেট ওয়েটল্যান্ডস ন্যাশনাল নেচার রিজার্ভ-এর বিস্তীর্ণ এলাকাটি পর্যটকদের জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। পুরনো দিনের ‘সোমারসায়েট’ শব্দ থেকে এই অঞ্চলের নাম এসেছে, যার অর্থ ‘গ্রীষ্মের ভূমি’। শীতকালে বন্যা হওয়ার কারণে একসময় এখানে বসবাস করা কঠিন ছিল।
কালের পরিবর্তনে এখানে গড়ে উঠেছে ফ্রোমের মতো সুন্দর বাজার শহর এবং মধু রঙের পাথরের গ্রাম।
গ্লাস্টনবারি শহরটি মূলত একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে কিং আর্থারের সমাধিস্থল রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
শহরের প্রধান রাস্তাটিতে নিউ এজ মিস্টিকিজমের ছোঁয়া পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে নানান ধরনের দোকান, যেখানে ট্যারো কার্ড রিডিং এবং হিলিং ক্রিস্টাল পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, আধুনিক সোমারসেটের প্রতিচ্ছবি হলো ব্রুটন শহর। এখানে অত্যাধুনিক আর্ট স্পেস এবং চমৎকার সব রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
সোমারসেটের সেরা কিছু খাবারের ঠিকানা।
সোমারসেটের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো ক্যাসেল ক্যারি। এখানকার ‘দি ক্রিমেরি’ রেস্টুরেন্টটি বিশেষভাবে পরিচিত।
এটি একটি পুরনো দুগ্ধ খামারে তৈরি করা হয়েছে, যা এখনো নিজস্ব পনির তৈরি করে। এখানে হালোমি-স্টাইলের সাটন ব্রু-এর মতো নানা স্বাদের খাবার পাওয়া যায়। যা ভ্রমণকারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
সোমারসেটের সেরা পণ্যগুলো সরাসরি তাদের উৎস থেকে উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। ওয়েস্টকোম্ব ডেইরিতে তাদের উৎপাদিত চ্যাডর চিজ খুবই বিখ্যাত।
এখানে ‘টিনা দ্য টার্নার’ নামের একটি বিশেষ রোবট দিয়ে চিজ তৈরির প্রক্রিয়া দেখানো হয়। এছাড়াও, ল্যান্ডরেস বেকারি থেকে পাওয়া যায় দারুণ স্বাদের সাওয়ারডফ ব্রেড।
যারা উৎসবের আমেজ পছন্দ করেন, তারা গ্লাস্টনবারির টর-এ যেতে পারেন। এখান থেকে সোমারসেট এবং পার্শ্ববর্তী উইল্টশায়ার ও ডরসেটের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
চূড়ায় উঠতে প্রায় আধ ঘণ্টা মতো সময় লাগে। পাহাড়ের উপরে পঞ্চদশ শতাব্দীর সেন্ট মাইকেল চ্যাপেলের ধ্বংসাবশেষও দেখা যায়। এছাড়াও, এখানকার পবিত্র স্থান চালিস ওয়েলে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সোমারসেটে থাকার সেরা জায়গা।
সোমারসেটের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য ওয়েডমোরের ‘দি সোয়ান’ একটি চমৎকার জায়গা। এটি একটি পুরনো ১৮ শতকের কোচিং ইন, যেখানে আতিথেয়তা মুগ্ধ করার মতো।
এখানকার বিশাল বাগানে বসে স্থানীয় পানীয়ের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে। এখানকার প্রতিটি কামরায় প্রকৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়। এছাড়া, ব্রুটনের কাছে হ্যাডস্পেন গ্ল্যাম্পিং-এ সাফারি-স্টাইলের তাঁবুতে থাকারও সুযোগ রয়েছে।
সোমারসেট তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং আধুনিক সংস্কৃতির জন্য পরিচিত।
গ্লাস্টনবারির বাইরেও এখানে ঘুরে আসার মতো অনেক কিছুই রয়েছে, যা ভ্রমণকারীদের মন জয় করে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক