লন্ডনের চায়নাটাউনে, যেখানে সবসময়ই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে, সেখানে যেন এক শান্ত আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছে ঐতিহ্যবাহী একটি চীনা রেস্টুরেন্ট – সং হে লউ।
চীনের সুজহু প্রদেশের এই রেস্টুরেন্টটি প্রায় ২৭০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সম্প্রতি তারা তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক শাখা খুলেছে লন্ডনে।
এই রেস্টুরেন্টটি তার নান্দনিকতা এবং খাবারের স্বাদের জন্য ইতিমধ্যেই খাদ্যরসিকদের মন জয় করেছে।
ওয়ার্ডোর স্ট্রিটের কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে, সং হে লউ যেন এক ভিন্ন জগৎ। বাইরের ঝলমলে আলো কিংবা পর্যটকদের ভিড় সেখানে নেই।
বরং, ধূসর পাথরের দেওয়াল, বাঁশের আলোছায়া এবং হালকা সাজসজ্জা – সব কিছু মিলে এক শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশ তৈরি করেছে। রেস্টুরেন্টটি সুজহুর খাবারের স্বাদ ও সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার এক চমৎকার প্রয়াস।
সং হে লউ-এর মেন্যুতে রয়েছে সুজহুর ঐতিহ্যবাহী নানা পদ। তাদের বিশেষত্ব হল স্যুপ নুডলস।
এই নুডলসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় নানান ধরনের সুস্বাদু উপকরণ। যেমন – মিষ্টি ও টক স্বাদের “কাঠবিড়ালীর আকারের” সি-বেস মাছ, জিঁউইয়ে ভাজা ঈল মাছ, এবং কাঁকড়ার মাংস ও ডিমের লোভনীয় স্যুপ।
খাবারের স্বাদ যেন মুখের জল আনা এক অভিজ্ঞতা! মেন্যুতে আরও আছে নানা ধরনের সবজির পদ, ভিনেগার এবং আদা কুচি।
যারা একটু ভিন্ন স্বাদের খাবার পছন্দ করেন, তাদের জন্য এখানে রয়েছে শুকরের মাংসের বিশেষ পদ, বাঁশ কোড়লের সঙ্গে সরিষার শাক, এবং কিডনির টুকরোর হালকা ভাজা পদ।
ডেজার্ট হিসেবে তাদের আছে মিষ্টি কুমকোয়াট, জলপাই এবং শুকনো বাঁশ কোড়লের আচার। এছাড়াও, লাল বিন ও চালের তৈরি তিন রঙের কেক-এর স্বাদ ভোলার মত নয়।
সং হে লউ-এর খাবারের স্বাদ যেমন আকর্ষণীয়, তেমনই এর পরিবেশও শান্ত ও আরামদায়ক।
রেস্টুরেন্টটি কোলাহলমুক্ত পরিবেশে, বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত। এখানে বসে এক কাপ চা খেতে খেতে সুস্বাদু নুডলস উপভোগ করা যেতে পারে, যা নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
লন্ডনের চায়নাটাউনে অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টটি (ঠিকানা: ২২ ওয়ার্ডোর স্ট্রিট, লন্ডন W1, ফোন: ০২০-৪৫৩১ ২৬৭৮) প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে (শুক্রবার ও শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত)।
জনপ্রতি খাবারের খরচ প্রায় £৩০ (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৪,০০০ টাকা), যা পানীয় ও সার্ভিস চার্জের বাইরে। যারা ভিন্ন স্বাদের খাবার ও শান্ত পরিবেশ ভালোবাসেন, তাদের জন্য সং হে লউ একটি আদর্শ জায়গা।
তথ্য সূত্র: The Guardian