এক সময়ের তিক্ত সম্পর্ক, তারপর অপ্রত্যাশিত বন্ধুত্ব – এমনই এক অসাধারণ গল্পের সাক্ষী দুই নারী। তাদের পথচলার শুরুটা হয়তো সহজ ছিল না, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারা একে অপরের সবচেয়ে বড় শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
তাদের জীবনের গল্প এখন অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। শুরুতে, একজনের প্রাক্তন সঙ্গীর জীবনে আসা অন্য নারীটিকে নিয়ে ছিল কৌতূহল আর কিছু দ্বিধা।
নিজের সম্পর্কে প্রাক্তন সঙ্গীর মুখে শোনা কথাগুলো হয়তো খুব একটা ভালো ছিল না। তাই, সামাজিক মাধ্যমে তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হয়, অনেকটা যেন শিকারীর মতো।
সেই সময়ে, অন্য নারীর ছবিগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন তিনি, বিশেষ করে তার রুচিশীল পোশাক-পরিচ্ছদ। বিষয়টি হয়তো হাস্যকর ছিল, কিন্তু মনের গভীরে থাকা ঈর্ষা কিছুতেই যেন কমতে চাইছিল না।
তাদের দুজনেরই সন্তান ছিল, কিন্তু তাদের সম্পর্ক ছিল জটিল। বিচ্ছেদের পর সন্তানদের নিয়ে আইনি লড়াই, তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তারা দুজনেই তাদের সন্তানের ভালো থাকার জন্য একটি সমঝোতায় আসেন। এর মধ্যে, তাদের প্রাক্তন সঙ্গী অন্য একজন নারীকে ভালোবাসেন এবং তাদের মধ্যে নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই, এই নতুন নারীর প্রতি প্রথম প্রতিক্রিয়া বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না।
কিন্তু সবকিছু বদলে যায় যখন তারা মুখোমুখি হন। গ্রীষ্মের এক সকালে, একটি ফরাসি রেস্তোরাঁয় তাদের প্রথম দেখা হয়। দেখা হওয়ার পর, তাদের মধ্যে এক গভীর আবেগপূর্ণ মুহূর্ত তৈরি হয়।
তারা দুজনেই বুঝতে পারছিলেন, তাদের পথ একটাই—সন্তানদের ভালো রাখা। তাদের কথোপকথনে উঠে আসে অতীতের অনেক না-বলা কথা, যা তাদের আরো কাছাকাছি এনে দেয়।
তারা অনুভব করেন, তারা একা নন। তাদের দুজনের জীবনেই এসেছে কঠিন সময়, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা, সন্তানের জন্য উদ্বেগ।
এরপর, তাদের সম্পর্কের মোড় ঘুরে যায়। তারা একে অপরের সন্তানদের প্রতিও যত্নশীল হয়ে ওঠেন। একজনের অসুস্থতার সময়, অন্যজন ছিলেন সবসময় পাশে।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড় সহযোগী। তারা একে অপরের ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন, এবং তাদের সন্তানদের যৌথভাবে দেখাশোনা করতে শুরু করেন।
কালের পরিক্রমায়, তারা এক অসাধারণ সম্পর্ক তৈরি করেছেন, যা সমাজের প্রচলিত ধারণাকে ভেঙে দেয়। তারা প্রমাণ করেছেন, ভালোবাসার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।
সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, পারস্পরিক সম্মান আর বন্ধুত্বের শক্তিতে তারা গড়ে তুলেছেন এক নতুন পরিবার। তাদের এই গল্পে, পুরনো সম্পর্কের তিক্ততা ভুলে, কিভাবে নতুন করে পথ চলা যায়, সেটাই যেন মুখ্য হয়ে উঠেছে।
এই মুহূর্তে, তাদের সম্পর্কের গভীরতা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তারা প্রমাণ করেছেন, জীবনের কঠিন সময়ে একজন আরেকজনের পাশে থাকাটাই আসল।
তারা দেখিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্কের সংজ্ঞা সময়ের সাথে সাথে বদলায়, আর ভালোবাসার কোনো সীমা নেই।
তথ্য সূত্র: People