হঠাৎ ছুটিতে পুলিশ মন্ত্রী, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ! নড়েচড়ে বসল দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা পুলিশ মন্ত্রী সেনজো মচুনিকে বরখাস্ত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি একটি অপরাধ চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে জড়িত ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ তদন্তে হস্তক্ষেপ করেছেন।

রবিবার এই ঘোষণা আসে, যা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

অভিযোগটি এনেছেন কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের পুলিশ কমিশনার নহলানহা মখওয়ানাজি। তাঁর ভাষ্যমতে, মন্ত্রী মচুনি রাজনীতিবিদ, পুলিশ কর্মকর্তা এবং অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বাঁচাতে একটি বিশেষ পুলিশ ইউনিট ভেঙে দিয়েছিলেন, যাদের কাজ ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা।

মখওয়ানাজি আরও জানান, এই ইউনিট থেকে ১০০টির বেশি মামলার ফাইল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সেগুলোর কোনো তদন্ত হয়নি।

তবে, সেনজো মচুনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।

তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এর প্রতি অবিচল থাকবেন বলেও জানান।

প্রেসিডেন্ট রামাফোসা, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় এসেছিলেন, এই অভিযোগের পর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন।

বিরোধী দলগুলোসহ সাধারণ মানুষও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছে, কারণ এতে দেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

বিনিয়োগকারীরাও দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার উচ্চ অপরাধ হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এই কারণে দেশটির জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ ক্ষতি হয়।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট রামাফোসা দ্রুত একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই তদন্তের জন্য তিনি অধ্যাপক ফিরোজ কাচালিকে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বরখাস্ত হওয়া পুলিশ মন্ত্রী সেনজো মচুনি ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৭ সালের নির্বাচনে তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স এই ঘটনার সংসদীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

এই ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

এখন দেখার বিষয়, এই অভিযোগের তদন্তে কী ফলাফল আসে এবং এর মাধ্যমে দেশের দুর্নীতি দমনে সরকার কতটা সফল হয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *