মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘বদনাম’ গায়ে, দেশে ফিরেই যা বললেন বিতাড়িত রাষ্ট্রদূত!

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রাসুল দেশে ফিরে আসার পর বীরোচিত সংবর্ধনা পেলেন। ট্রাম্প প্রশাসন তাকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করার প্রেক্ষাপটে, বিমানবন্দরে সমর্থকেরা তাকে স্বাগত জানান এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। খবরটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রাসুল যখন কেপ টাউন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান, তখন সেখানে উপস্থিত জনতা তাকে অভিনন্দন জানায়। বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষারত কয়েকশ সমর্থক তাদের ভালোবাসায় রাষ্ট্রদূতকে আপ্লুত করে তোলেন। এসময় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ।

সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে রাসুল বলেন, ‘আমাকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়েছে, যা অপমানজনক। কিন্তু আপনাদের এমন উষ্ণ অভ্যর্থনা আমার কাছে সম্মানের প্রতীক।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক সপ্তাহ আগে রাসুলকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে এবং তার কূটনৈতিক অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা বাতিল করে দেয়। এরপর তাকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সাধারণত, কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা একটি বিরল ঘটনা।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছিল। এর পাশাপাশি, ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ও ইরানের প্রতি সমর্থন দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত রাসুলের এই বহিষ্কারের ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।

রাষ্ট্রদূত রাসুল তার বক্তব্যে, ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে দেওয়া মন্তব্যের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিশ্লেষণে অটল থাকব, কারণ আমরা কোনো ব্যক্তি বা সরকারের সমালোচনা করিনি, বরং একটি রাজনৈতিক ঘটনার বিশ্লেষণ করেছি।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে সরে আসবে না। একইসঙ্গে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন।

এই ঘটনার পরে, অনেকে মনে করছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে। তবে, রাসুলের এই প্রত্যাবর্তনে সেখানকার মানুষ তাদের নেতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *