ঐতিহাসিক! ২০৩০ বিশ্বকাপে ৬৪ দল? বড় ঘোষণার পথে?

ফিফা বিশ্বকাপ, বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর, ২০৩০ সালে এক নতুন দিগন্তে পা দিতে চলেছে। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)-এর প্রধান আলেহান্দ্রো ডমিঙ্গুয়েজ প্রস্তাব দিয়েছেন, এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৬৪টি দল।

প্রস্তাবটি যদি গৃহীত হয়, তবে এটি হবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দলসংখ্যার সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।

আসলে, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ এমনিতেই বিশেষ হতে যাচ্ছে, কারণ এটি হবে বিশ্বকাপের শততম বর্ষপূর্তি। ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এই বিশেষ আসরটি তিনটি মহাদেশের ছয়টি দেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে: উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, স্পেন, পর্তুগাল এবং মরক্কো। কনমেবলের মতে, শতবর্ষ উদযাপনটি “একক” হওয়া উচিত, এবং সে কারণেই তারা ৬৪ দলের অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে।

বর্তমানে, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ৩২টি দল অংশ নিয়েছিল। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে, যা যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় অনুষ্ঠিত হবে, দল সংখ্যা বেড়ে ৪৮-এ দাঁড়াবে।

ডমিঙ্গুয়েজের প্রস্তাব যদি কার্যকর হয়, তবে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে আরও ১৬টি দল যোগ হবে।

এই প্রস্তাবের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো, কনমেবলের সব ১০টি সদস্য দেশকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। এর ফলে, ভেনেজুয়েলার মতো দল, যারা আগে কখনো বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, তাদেরও সুযোগ তৈরি হবে।

ডমিঙ্গুয়েজ বলেছেন, “এর মাধ্যমে, প্রতিটি দেশের বিশ্ব আসরে অংশগ্রহণের সুযোগ হবে এবং বিশ্বের কোনো দলই এই উৎসবে যোগ দিতে বাদ পড়বে না।”

তবে, এই প্রস্তাবের কিছু সমালোচকও রয়েছেন। তাদের মতে, দল সংখ্যা বাড়ানো হলে খেলার মান কমে যেতে পারে এবং বাছাইপর্বের গুরুত্ব হ্রাস পেতে পারে।

উয়েফা প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্দার সেফেরিন এই প্রস্তাবকে “খারাপ ধারণা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

যদি ফিফা এই প্রস্তাব অনুমোদন করে, তবে টুর্নামেন্টে ম্যাচের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। ১৯৯৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৬৪ ম্যাচের ফরম্যাট ছিল, যেখানে নতুন প্রস্তাবে ম্যাচের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ১২৮-এ পৌঁছাবে।

ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই টুর্নামেন্ট বড় করার পক্ষে মত দিয়েছেন, যার মাধ্যমে ফিফার ২১১টি সদস্য ফেডারেশনকে আরও বেশি রাজস্ব দেওয়া এবং তাদের জাতীয় দলগুলোর জন্য বেশি সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে।

বিশ্বকাপে দল সংখ্যা বাড়ানো হলে এশিয়ান দলগুলোর জন্যও সুযোগ বাড়তে পারে। বর্তমানে এশিয়ান দলগুলো বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপে খেলার জন্য লড়াই করে।

দল সংখ্যা বাড়লে, তাদের জন্য যোগ্যতা অর্জনের পথ আরও সুগম হতে পারে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো ফিফার হাতে। ফুটবলপ্রেমীরা এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ফল কী হয়, সেদিকে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *