যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়, লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটি, প্রায় ১৮০ বছর পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর্থিক সংকটের কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই এর কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি পুনরায় চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বেসরকারি খ্রিস্টান বিশ্ববিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছে। তবে গত এক দশকে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি মারাত্মক আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করা হলেও, তা পর্যাপ্ত ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা প্রায় ২.১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছিল, যা তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
এই কারণে, তারা এখন পর্যন্ত সংগৃহীত সকল অনুদান ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান র্যান্ডাল রিচার্ডসন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা ও কাজের মাধ্যমে লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটির চেতনা টিকে থাকবে।
যদিও আমাদের দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তবে লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটির প্রভাব সবসময় বিদ্যমান থাকবে।”
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা করবে। এছাড়া, গ্য়াফনি শহরে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষক ও কর্মচারী চাকরি হারাবেন।
শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ১২,৫০০।
লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটির এই দুঃখজনক পরিণতি শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান কিছু উদ্বেগের চিত্র তুলে ধরে। বর্তমানে অনেক বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে, শিক্ষার্থী কমে যাওয়া এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে।
লাইমস্টোন ইউনিভার্সিটির এই সিদ্ধান্তের কয়েক দিন আগে, উত্তর ক্যারোলিনার সেন্ট অ্যান্ড্রুজ ইউনিভার্সিটি-ও বন্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস