দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি জর্জিয়ার একটি কারখানায় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অভিযানে বেশ কয়েকজন কোরীয় নাগরিককে আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কে যেন কোনো চিড় না ধরে, সেই লক্ষ্যে সিউলের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জর্জিয়ার একটি হাইন্দাই-এলজি যৌথ কারখানায় যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) বিভাগের একটি অভিযান চালানো হয়। এতে প্রায় ৩০০ জন দক্ষিণ কোরীয় নাগরিককে আটক করা হয়। আটকদের দেশে ফেরানোর জন্য একটি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, আটকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনার জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন। বিশেষ করে, যখন দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে, তখন এমন ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি কোরিয়ান এয়ার ও হাইন্দাইয়ের মতো বড় কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
জর্জিয়ার ওই কারখানাটি একটি বিশাল বিনিয়োগ প্রকল্প, যা আগামী বছর চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে প্রায় ৮,৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আটককৃত শ্রমিকদের ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে, এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও সেখানে কাজ করছিলেন।
বিরোধী দলগুলো এই ঘটনাকে ‘অভূতপূর্ব কূটনৈতিক বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। অনেকে মনে করছেন, কোরীয় নাগরিকদের সঙ্গে এমন আচরণ দ্বি-পক্ষীয় বন্ধুত্বের পরিপন্থী।
যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কোরীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে এই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে, এই ধরনের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
এই ঘটনার জেরে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতেও খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে পরিবেশিত হচ্ছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে এবং আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে যে, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন