দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন মন্ত্রী কিম মুন-সুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। রক্ষণশীল পিপলস পাওয়ার পার্টি (People Power party) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আগামী ৩ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে কিম লড়বেন প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ুং-এর বিরুদ্ধে।
কিম মুন-সু একসময় শ্রমিক আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে তিনি রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের মন্ত্রিসভায় শ্রম মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচিত হলে ব্যবসা-বান্ধব নীতি গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। কিমের বয়স ৭৩ বছর।
নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়াটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর আগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসন হয়। ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থা জারির চেষ্টার অভিযোগ ছিল, যে কারণে তাকে পদ ছাড়তে হয়।
কিম মুন-সু তার মনোনয়ন ভাষণে উত্তর কোরিয়ার প্রতি কঠোর নীতি গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি ব্যবসা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতে প্রণোদনা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়া, তরুণ শ্রমিক এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য নীতি আরও জোরদার করার কথাও জানান তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনে কিমের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে জনসমর্থন আদায় করা। কারণ, জনমত জরিপে বিরোধী দলীয় প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ুং বেশ অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।
রিয়েলমিটারের এক জরিপে দেখা গেছে, লি’র প্রতি সমর্থন প্রায় ৫০ শতাংশ, যেখানে কিমের পক্ষে সমর্থন ১৩ শতাংশ।
তবে, নির্বাচনের আগে লি জায়ে-মিয়ুং-এর নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছে। যদিও নিম্ন আদালত তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল, উচ্চ আদালত সেই রায় বাতিল করে দিয়েছে এবং পুনরায় শুনানির জন্য মামলাটি ফেরত পাঠিয়েছে।
ফলে, তার প্রার্থীপদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যদিও ক্ষমতাসীন দলের সদস্য নন, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি বিরোধী দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই নির্বাচনের ফলাফল দেশটির ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক এবং দেশের অর্থনৈতিক নীতি কেমন হবে, সে বিষয়ে জনগণের রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান