শিরোনাম: দক্ষিণ কোরিয়ায় হামের প্রাদুর্ভাব, বাংলাদেশেও কি ঝুঁকি বাড়ছে?
গত কয়েক বছরে দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে হাম রোগের প্রকোপ বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি, দক্ষিণ কোরিয়ায় হামের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরটিতে এখন পর্যন্ত ৫২ জন হামে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ সালে দেশটিতে ১৯৪ জন হামে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়াকে হামমুক্ত ঘোষণা করেছিলো, কিন্তু আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সেখানে পুনরায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।
শুধু দক্ষিণ কোরিয়া নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোতেও হামের প্রকোপ বাড়ছে। ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডে এই রোগের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। ভিয়েতনামে এ বছর প্রায় ৪০,০০০ সন্দেহভাজন হামের রোগী শনাক্ত করা হয়েছে এবং এরই মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে গত বছর ৭,৫০০ জনের বেশি মানুষ হামে আক্রান্ত হয়েছেন, যেখানে তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৮।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাম একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে এটি দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে। হামের ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর ফুসফুস, ত্বক এবং মস্তিষ্কে গুরুতর সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এর ফলে নিউমোনিয়া, এনসেফ্যালাইটিস (মস্তিষ্কের প্রদাহ) এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হাম প্রতিরোধে টিকার গুরুত্ব অপরিসীম।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, হামে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশ থেকে আসা যাত্রী। তাই, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কারণে এই রোগ দ্রুত এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, হাম অত্যন্ত সংক্রামক রোগ হওয়ার কারণে যারা টিকা নেয়নি, তাদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি।
বাংলাদেশেও হাম প্রতিরোধের জন্য টিকাদান কর্মসূচি চালু রয়েছে। শিশুদের হাম থেকে বাঁচাতে নিয়মিত টিকাকরণের কোনো বিকল্প নেই। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হামের বিস্তার রোধ করতে হলে টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করতে হবে এবং জনগণকে সচেতন করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, হামের টিকা দুটি ডোজ নিলে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত এই রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। তাই, সবারই উচিত শিশুদের টিকা দেওয়া এবং হামের বিস্তার রোধে সচেতন হওয়া।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান