দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনীতি এখন বেশ সরগরম। আগামী ৩রা জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হলো প্রথম টেলিভিশন বিতর্ক।
বিতর্কে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ুং এবং বিরোধী দলীয় প্রার্থী কিম মুন-সু। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওলের অপসারণের পর সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আলোচনায় উঠে আসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লি জায়ে-মিয়ুং পররাষ্ট্রনীতিতে বাস্তবতার ওপর জোর দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্ব স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন।
একইসঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। অন্যদিকে, কিম মুন-সুর প্রধান ফোকাস ছিল দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার ওপর।
তিনি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যবসার প্রসারের জন্য নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা এবং গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
বিতর্কে উভয় প্রার্থীই যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি এবং উচ্চ প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। লি জায়ে-মিয়ুং কর্মীদের জন্য স্বল্প কর্মদিবসের প্রস্তাব করেন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)-এর উন্নয়নে জোর দেন।
তিনি জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে ChatGPT-এর মতো সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলেন।
অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ওঠার জন্য উভয় প্রার্থীর পরিকল্পনা ছিল সুস্পষ্ট। সম্প্রতি প্রকাশিত গ্যালাপ কোরিয়ার জরিপে দেখা যায়, লি জায়ে-মিয়ুং-এর প্রতি সমর্থন ৫২ শতাংশ, যেখানে কিম মুন-সুর প্রতি সমর্থন ২৯ শতাংশ।
বিতর্কের শুরুতে লি জায়ে-মিয়ুং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দুই মেয়াদ এবং গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তাব করেন। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতিরা এক মেয়াদে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওলের বিতর্কিত মার্শাল ল’ জারির বিষয়েও আলোচনা হয়। বিরোধী দল অভিযোগ করে যে, ইউন সুক-ইওল ক্ষমতা ধরে রাখতে সামরিক আইন জারির চেষ্টা করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই বিতর্কের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচনী উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের ওপর দেশটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা