যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অভিযানে আটক হওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমিকদের বিশেষ বিমানে করে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রবিবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়। খবরটি জানিয়েছে সিএনএন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জর্জিয়ার এলাবেলে অবস্থিত হুন্দাই মেটাপ্ল্যান্টে (Hyundai Metaplant) অভিবাসন বিভাগ ব্যাপক ধরপাকড় চালায়। এই অভিযানে প্রায় ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। হুন্দাই ও এলজি এনার্জি সলিউশন (LG Energy Solution) নামক দুটি দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি যৌথভাবে এই বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি প্ল্যান্টটি পরিচালনা করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ কাং হুন-সিক (Kang Hoon-sik) জানান, ‘সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ব্যবসা সংস্থা এবং কোম্পানিগুলোর দ্রুত পদক্ষেপের ফলে আটক শ্রমিকদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। কিছু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এখনো বাকি আছে, সেগুলো সম্পন্ন হওয়ার পরেই একটি বিশেষ বিমান তাদের ফিরিয়ে নিতে যাত্রা করবে।’
আটকদের মুক্ত করতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত কোরিয়ান দূতাবাস এবং আটলান্টার কনস্যুলেট জেনারেলও এতে সহায়তা করছে। কাং হুন-সিক আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আমরা বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ভিসা পদ্ধতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য আসা কর্মীদের স্ট্যাটাস পর্যালোচনা করব।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আটককৃত নাগরিকদের দ্রুত মুক্তি এবং বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোর স্থিতিশীল বাস্তবায়নে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।’
এর আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জায়ে মিউং (Lee Jae Myung) আটক শ্রমিকদের সহায়তার জন্য ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এলজি এনার্জি সলিউশন জানায়, তাদের হিউম্যান রিসোর্সের প্রধান আটক শ্রমিকদের মুক্ত করতে জর্জিয়া যাচ্ছেন। কোম্পানিটি তাদের কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্র সফরও স্থগিত করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘বর্তমানে কর্মরত কর্মীদের হয় দ্রুত দেশে ফিরতে, না হয় তাদের আবাসস্থলে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।’ এলজি এনার্জি সলিউশনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা কিম কি-সু (Kim Ki-soo) এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আটককৃতদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া এখন আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।’
হুন্দাইয়ের এক মুখপাত্র শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, ‘হুন্দাই যে দেশেই ব্যবসা পরিচালনা করে, সেখানকার সব আইন ও বিধি-নিষেধ সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে। এর মধ্যে কর্মসংস্থান যাচাই এবং অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত।’
তথ্য সূত্র: সিএনএন