দক্ষিণ সুদানে একজন ব্যক্তিকে প্রবেশের অনুমতি দিতে রাজি হয়েছে দেশটির সরকার, যিনি মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকার দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গেছে, বিতাড়িত হওয়া ওই ব্যক্তি প্রথমে দক্ষিণ সুদানে প্রবেশ করতে গেলে তার জাতীয়তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পর, জুবা সরকার শুরুতে ওই ব্যক্তিকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। তবে পরে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনা করে দক্ষিণ সুদান সরকার তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এই ব্যক্তিকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে জানা যায়, দক্ষিণ সুদান সরকার বিতাড়িত হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেয়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও জানান, দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে এবং নতুন করে কাউকে ভিসা দেওয়া হবে না।
দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিতাড়িত হওয়া ওই ব্যক্তির নাম মাকুলা কিনতু। তিনি মূলত কঙ্গোর নাগরিক। কিনতু শনিবার জুবা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। তবে তার কাছে থাকা ভ্রমণ নথিতে ‘নিমেরি গারং’ নামে দক্ষিণ সুদানের এক নাগরিকের পরিচয় পাওয়া যায়। পরে যাচাই-বাছাইয়ের পর জানা যায়, তিনি আসলে গারং নন, বরং প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (DRC) নাগরিক মাকুলা কিনতু।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কিনতুকে সেসময় দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো হয়। তবে তারা জানিয়েছে, আসল ‘গারং’-এর প্রত্যাবর্তনের জন্য তারা অপেক্ষা করছে, যিনি আগামী মাসে জুবাতে ফিরবেন।
মার্কিন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিনতু ২০০৩ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ২০০৯ সালে কঙ্গোতে ফিরে যান। ২০১৬ সালের ১০ জুলাই তিনি অবৈধভাবে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। কিনতুকে যখন জুবা বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন তিনি জানান, তিনি কঙ্গোর নর্দার্ন কিভু প্রদেশের ইমা উপজাতির লোক এবং জোর করে তাকে দক্ষিণ সুদানে আনা হয়েছে।
দক্ষিণ সুদান সরকার জানিয়েছে, কিনতুকে বুধবার পুনরায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়া প্রকৃত দক্ষিণ সুদানি নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনে সরকার সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন