যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থা সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স তাদের দীর্ঘদিনের একটি বিশেষ সুবিধা, বিনামূল্যে লাগেজ বহনের নিয়ম বাতিল করতে যাচ্ছে। বুধবার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নতুন নিয়মের ফলে, এখন থেকে যাত্রীদেরকে তাদের লাগেজের জন্য অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।
খবর অনুযায়ী, এই পরিবর্তনের কারণ হলো, আর্থিক চাপ এবং মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা।
সাউথওয়েস্ট কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম লাগেজটির জন্য ৩৫ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪,১০০ টাকা, যেখানে ১ মার্কিন ডলার = ১১৭ টাকা) এবং দ্বিতীয় লাগেজটির জন্য ৪৫ মার্কিন ডলার (প্রায় ৫,২৬৫ টাকা) ফি দিতে হবে।
তবে, যারা এয়ারলাইন্সের ‘র্যাপিড রিওয়ার্ডস’ প্রোগ্রামের উচ্চ স্তরের সদস্য, বিজনেস ক্লাসের টিকিট কিনেছেন অথবা সাউথওয়েস্টের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, তাদের এই ফি দিতে হবে না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, যারা সাধারণত সাউথওয়েস্টের যাত্রী ছিলেন, তাদের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে।
অতীতে, এই বিমান সংস্থাটি বিনামূল্যে দুটি লাগেজ বহনের সুবিধা দিয়ে আসছিল, যা তাদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল।
এই নীতির কারণে অনেক যাত্রী সাউথওয়েস্টকে বেছে নিতেন। তবে নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, টিকিট বুক করার সময় যাত্রীদেরকে লাগেজ ফি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
বিমান সংস্থাটি জানিয়েছে, লাগেজ ফি চালু করার ফলে বছরে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রাজস্ব আসবে।
যদিও এর ফলে, প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যবসার ক্ষতি হতে পারে, কারণ অনেক যাত্রী হয়তো অন্য কোনো বিমান সংস্থার দিকে ঝুঁকবেন।
শুধু লাগেজ নীতিতেই পরিবর্তন আসছে না, এর সঙ্গে আরও কিছু নতুন নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে।
যেমন, উড়োজাহাজে মোবাইল চার্জার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে যাত্রীদেরকে তাদের বহনযোগ্য চার্জারগুলো দৃশ্যমান স্থানে রাখতে হবে, কারণ লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থেকে আগুনের ঝুঁকি বাড়ছে।
এছাড়া, সিট সংরক্ষণেও পরিবর্তন আসছে এবং সম্ভবত সামনের বছর থেকে আসন নির্দিষ্ট করে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
আর্থিক চাপ মোকাবিলায় সাউথওয়েস্ট সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
কর্মীদের ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে তারা তাদের কর্পোরেট কর্মীর ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১,৭৫০ জনের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে।
কোম্পানিটি মুনাফা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে, যার মধ্যে টিকিটের দাম বাড়ানো এবং নতুন রুটে ফ্লাইট চালুর মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
বর্তমানে, বিমান সংস্থাটি কর্মী ছাঁটাই, টিকিটের দাম বৃদ্ধি, এবং অন্যান্য পরিষেবার ওপর মনোযোগ দিচ্ছে, যা তাদের ব্যবসায়িক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস