প্রায় অর্ধ-শতাব্দীকাল ধরে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা একটি সোভিয়েত যুগের মহাকাশযান অবশেষে গত শনিবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৯৭২ সালে শুক্র গ্রহে অভিযান পরিচালনার উদ্দেশ্যে এটি উৎক্ষেপণ করা হলেও, সেই অভিযান ব্যর্থ হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্পেস সার্ভিলেন্স অ্যান্ড ট্র্যাকিং এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ESA) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কসমস-৪৮২ নামের এই মহাকাশযানটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
কক্ষপথে দীর্ঘ সময় ধরে থাকার কারণে এর বিভিন্ন অংশ ইতিমধ্যে ক্ষয়ে গিয়েছিল। তবে, বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছিলেন, এর কিছু অংশ, বিশেষ করে টাইটানিয়াম দ্বারা আবৃত ল্যান্ডারটি, পৃথিবীর কঠিন আবরণে প্রবেশ করার পরেও টিকে থাকতে পারে। ল্যান্ডারটির ব্যাস ছিল প্রায় ১ মিটার এবং ওজন ছিল প্রায় ৫০০ কিলোগ্রামের বেশি।
মহাকাশযানটি যখন পৃথিবীতে ফিরে আসছিল, তখন বিজ্ঞানীরা এর গতিপথ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তবে এর অবতরণের সঠিক স্থান আগে থেকে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি, সৌর কার্যকলাপ এবং মহাকাশযানের দীর্ঘ সময়ের কারণে এটির অবস্থা আরও অনিশ্চিত করে তুলেছিল।
কসমস-৪৮২ মূলত শুক্র গ্রহে অবতরণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়েছিলেন, এটি সম্ভবত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস নাও হতে পারে।
মহাকাশযানটির ধ্বংসাবশেষ থেকে কারো আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। সাধারণত, পুরোনো স্যাটেলাইট বা মহাকাশের অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ প্রশান্ত মহাসাগর বা জনমানবহীন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রিতভাবে অবতরণ করানো হয়।
কিন্তু কসমস-৪৮২ এর ক্ষেত্রে এমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস কমান্ড শনিবার সকাল পর্যন্ত মহাকাশযানটির ধ্বংস হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত খবর জানায়নি, তবে তারা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। উল্লেখ্য, এই ধরনের মহাকাশযান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের ঘটনা প্রতি মাসে বেশ কয়েকবার ঘটে থাকে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস