আকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে সোভিয়েত আমলের একটি মহাকাশযান। ১৯৭২ সালে উৎক্ষেপণ করা এই যানটির আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এর ধ্বংসাবশেষ জনবহুল এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে কিনা, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
মহাকাশযানটির নাম ‘কোসমস-৪৮২’। সোভিয়েত ইউনিয়ন এটি ১৯৭২ সালের ৩১শে মার্চ তারিখে শুক্রগ্রহের উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিল।
কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি পৃথিবীর কক্ষপথে আটকা পড়ে যায়। এরপর থেকে, এটি অবিরাম পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ৮ থেকে ১১ই মের মধ্যে এটি পুনরায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে।
মহাকাশযানটি প্রায় ১০০০ পাউন্ড (প্রায় ৪৫৪ কিলোগ্রাম) ওজনের। এটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ মাইল (২৪১ কিলোমিটার) হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই যানটির ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের ৫২ ডিগ্রীর মধ্যে যেকোনো স্থানে পড়তে পারে।
যেহেতু পৃথিবীর বেশিরভাগ স্থান জল দ্বারা আবৃত, তাই এর ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে, উদ্বেগের বিষয় হল, কোসমস-৪৮২ বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি শুক্রগ্রহের তীব্র তাপ সহ্য করার মতো প্রযুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছিল।
ফলে, বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় এটি হয়তো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হবে না। এর কিছু অংশ অক্ষত অবস্থায় ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়তে পারে।
যদি এটি জনবহুল কোনো এলাকায় পরে, তবে তা ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এই মহাকাশযানের গতিপথের উপর কড়া নজর রাখছেন। তারা এর সম্ভাব্য অবতরণের স্থান সম্পর্কে আরও সুনির্দিষ্ট ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
এই ধরনের ঘটনা মহাকাশ বিজ্ঞান এবং পৃথিবীর পরিবেশের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।
মহাকাশ থেকে আসা কোনো বস্তুর পৃথিবীতে আগমন একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা সবসময় বিজ্ঞানীদের সতর্ক দৃষ্টির মধ্যে থাকে।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন এখন আর নেই। এটি ভেঙে বর্তমানে রাশিয়া সহ কয়েকটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
যেহেতু বাংলাদেশ এই সম্ভাব্য পতনের এলাকার বাইরে, তাই আমাদের উপর এর সরাসরি কোনো প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে, মহাকাশ থেকে আসা কোনো বস্তুর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
এই মুহূর্তে, বিজ্ঞানীরা পরিস্থিতির উপর গভীর নজর রাখছেন এবং ঘটনার বিষয়ে নিয়মিতভাবে নতুন তথ্য প্রদান করছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল