স্পেনে বিরল প্রজাতির বিড়াল বিক্রি, গ্রেপ্তার দম্পতি!

স্পেনে বিরল প্রজাতির বিড়াল কেনাবেচার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।

মানাকোর-এর একটি বাড়ি থেকে ১৯টি বিরল প্রজাতির বিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি মরুভূমির লিঙ্কস এবং দুটি সার্ভালও ছিল।

স্প্যানিশ পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ধৃত ব্যক্তিরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাদা বাঘ, কালো চিতা, হায়েনা এবং পুমা-সহ বিভিন্ন প্রাণী বিক্রি করত। তদন্তকারীরা রাশিয়া, বেলারুশ এবং চীন থেকে আসা ৪০টির বেশি পশুর পাসপোর্ট, দুটি কম্পিউটার, তিনটি মোবাইল ফোন এবং দুটি পেন ড্রাইভ জব্দ করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল আন্তর্জাতিক একটি চক্র, যেখানে ছিল পাচারকারী, পশু পালনকারী এবং পশুচিকিৎসক-সহ আরও অনেকে। গত মার্চ মাসে স্প্যানিশ পুলিশের প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ (Seprona) খবর পায় যে, মায়োর্কাতে একটি বাড়িতে বিরল প্রজাতির বিড়াল বিক্রি করা হচ্ছে।

এরপরই তদন্ত শুরু হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত দম্পতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল এবং তাদের এই বেআইনি ব্যবসা “বরফের চূড়ার” মতো।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই চক্রটি মূলত রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রাণী পাচার করত।

জানা গেছে, একটি ক্লাউডেড লেপার্ড (মেঘলা চিতা)-এর দাম ছিল প্রায় ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকা)। উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোকে মায়োর্কার সাফারী চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে এবং পরে স্পেনের আলিকান্তে শহরে তাদের পুনর্বাসন করা হবে।

পুলিশ আরও জানায়, এই ধরনের বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জন্য অনেক বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় এবং এরা মানুষের জন্য বিপজ্জনকও হতে পারে। তাই পাচারকারীরা এখন ঘরোয়া বিড়ালের সঙ্গে মরুভূমির লিঙ্কসের মতো প্রজাতিদের প্রজনন ঘটিয়ে কম বিপজ্জনক প্রাণী তৈরির চেষ্টা করছে।

উদ্ধার হওয়া সকল প্রাণী বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক কনভেনশন (CITES)-এর অধীনে সংরক্ষিত। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো বিপন্নপ্রায় বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা।

গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতির বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী বিষয়ক অপরাধ, চোরাচালান, জাল কাগজপত্র তৈরি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রাণী কল্যাণ তহবিলের (IFAW) মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবৈধ বন্যপ্রাণী পাচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *