গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে এবং মানবিক সংকট নিরসনে ইউরোপ ও আরব দেশগুলোর সমর্থন আদায়ে একজোট হয়েছে স্পেন। মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছে, যার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও রয়েছে।
রোববার অনুষ্ঠিত হওয়া এই সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ সরবরাহ স্বাভাবিক করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলভারেস বলেন, “আমরা এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই, যা এখন কোনো লক্ষ্য পূরণ করছে না। গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে হবে।
তিনি আরও জানান, আগামী ১৭ জুন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
মাদ্রিদের এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হল, জাতিসংঘের আসন্ন সম্মেলনের আগে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি আরও জোরালোভাবে উত্থাপন করা যায়।
জানা গেছে, রোববার অনুষ্ঠিত হওয়া এই বৈঠকে প্রায় ২০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এদের মধ্যে আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোও ছিল।
বৈঠকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান’-এর মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা হয়।
জার্মানির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্লোরিয়ান হান গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতিকে ‘অসহনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা এবং রাজনৈতিক সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো জার্মানির পররাষ্ট্র নীতির প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন, কিন্তু ইসরায়েল বর্তমানে তার চেয়ে অনেক কম ত্রাণ সরবরাহ করতে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা