শুক্রাণু দাতার শুক্রাণু: ১০ শিশুর ক্যান্সার, স্তম্ভিত বিশ্ব!

শিরোনাম: একই শুক্রাণু দাতার শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া ১০ শিশুর ক্যান্সার, উদ্বেগে চিকিৎসা মহল

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, একই শুক্রাণু দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে জন্ম নেওয়া অন্তত ১০ জন শিশুর মধ্যে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ ধরা পড়েছে।

এই ঘটনার পরে, ইউরোপের ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলোতে (fertility clinics) শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। একইসঙ্গে, শুক্রাণু দানের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই শিশুদের মধ্যে ক্যান্সারের কারণ হিসেবে একটি বিরল জিনগত পরিবর্তনকে (genetic variant) চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই শিশুদের মধ্যে Li-Fraumeni syndrome নামক একটি বিরল রোগ থাকতে পারে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিশুদের শরীরে পাওয়া যাওয়া এই জিনগত ত্রুটি (genetic mutation)-র মূল উৎস একই শুক্রাণু দাতা। ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক (European Sperm Bank) নামক একটি সংস্থা এই শুক্রাণু সরবরাহ করেছিল।

ডেনমার্ক, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডসে এই ব্যাংকের কার্যক্রম রয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে অন্তত ৬৭টি পরিবারে সন্তানের জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের শরীরে এই জিনগত ত্রুটি পাওয়া গেছে।

যদিও ঠিক কতজনের মধ্যে এই ত্রুটি রয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে, ইতিমধ্যেই affected (আক্রান্ত) পরিবারগুলোকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সেজন্য শুক্রাণু দানের আগে আরও বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন।

ফ্রান্সের একজন জীববিজ্ঞানী ড. এডউইজ ক্যাসপার (Dr. Edwige Kasper) এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা সকল শুক্রাণু দাতার পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিং (whole-genome sequencing) করতে পারি না, তবে জেনেটিক রোগের বিস্তার রোধ করতে হবে।

প্রত্যেক পুরুষের তো ইউরোপ জুড়ে ৭৫ জন করে সন্তান থাকে না।”

ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক জানিয়েছে, তারা তাদের নিয়ম অনুযায়ী, একজন দাতার শুক্রাণু থেকে সর্বোচ্চ ৭৫টি পরিবারে সন্তানের জন্ম দিতে পারে।

এই ঘটনার পর, ভবিষ্যতে দাতার সংখ্যা সীমিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে একটি নীতিমালা তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন অনেকে।

সংস্থাটির মুখপাত্র জুলি পাউলি বুডটজ (Julie Paulli Budtz) জানান, “আমরা আন্তর্জাতিকভাবে একটি পরিবার সীমা নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনাকে স্বাগত জানাই এবং বেশ কয়েকবার এর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছি।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভবিষ্যতে শুক্রাণু দানের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উন্নত পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *