খেলাধুলার জগতে, বিশেষ করে পেশাদার ক্রীড়া দলগুলোর বাজারমূল্য এখন আকাশ ছুঁয়ে চলেছে। সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্স-এর ফ্র্যাঞ্চাইজি মূল্য ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার সমান!
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে দলটির মালিকানা কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। এর আগে, বোস্টন সেলটিক্স-এর দল কিনে নেওয়ার রেকর্ড গড়েছিল, যার মূল্য ছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রেকর্ড বেশি দিন স্থায়ী নাও হতে পারে।
আসলে, খেলাধুলার দলগুলোর মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ কাজ করছে। প্রথমত, ভালো মানের দল পাওয়া কঠিন।
ভালো দলগুলো খুবই সীমিত, তাই এদের চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। দ্বিতীয়ত, টেলিভিশন স্বত্ব এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে খেলা সম্প্রচারের কারণে দলগুলোর আয়ের পরিমাণ বাড়ছে।
খেলা সম্প্রচার এখন মিডিয়া জগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তৃতীয়ত, ফ্যানদের ডেটা বা তথ্য সংগ্রহ করে তা থেকে বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়, যেমন – খেলা দেখার অভিজ্ঞতা, মার্চেন্ডাইজিং বা খেলার সামগ্রী বিক্রি এবং বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, কোনো দলের মালিক হতে পারাটা অনেকটা দামি সম্পত্তির মতো। বাজারে চাহিদা বাড়লে, স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ে।
খেলাধুলার দলগুলোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। এছাড়া, খেলা বিষয়ক বাজি বা স্পোর্টস গেমিংয়ের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে, যা এই বাজারের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে, এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে দল কিনলেই যে সাফল্য আসবে, এমনটা নাও হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, বেশি অর্থ খরচ করা দলগুলোও চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, বেসবল দল লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্স-এর খেলোয়াড়দের বেতন অনেক বেশি হলেও, সব সময় তারা সেরা ফল করতে পারে না। আবার, যাদের মালিকানার আর্থিক ক্ষমতা কম, তারাও ভালো ফল করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খেলোয়াড়দের বেতন এবং দলের সাফল্যের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। খেলোয়াড়দের ভালো পারফরম্যান্সের জন্য প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা, ইনজুরি এড়ানো এবং ভাগ্যের সহায়তা।
খেলাধুলার দলগুলোর মালিকানা এখন অনেক ধনী ব্যক্তির কাছে একটি সম্মানের বিষয়। তারা দলের অংশীদার হতে চান এবং এর মাধ্যমে সামাজিক সম্মান ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করেন।
উদাহরণস্বরূপ, লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্স-এর মালিক মার্ক ওয়াল্টার-এর কথা বলা যায়, যিনি এই দলের একটি বড় অংশ কিনেছেন।
সুতরাং, খেলাধুলার দলগুলোর মূল্যবৃদ্ধি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে এর আরও বিস্তৃতি ঘটবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন