ট্যাক্স ছাড়: কাদের সুবিধা, কেন এত বিতর্ক?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজ্য ও স্থানীয় কর কর্তন (State and Local Tax Deduction – SALT) নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই কর কর্তন ব্যবস্থাটি দেশটির নাগরিকদের জন্য তাদের ফেডারেল আয়কর কমাতে সহায়ক।

তবে এই সুবিধা কতটা বাড়ানো হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর বিতর্ক। বিশেষ করে, উচ্চ-আয়ের ব্যক্তিরা এই পরিবর্তনের ফলে কতটা সুবিধা পাবেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।

বর্তমানে, এই ‘স্যাল্ট’ কর্তনের সীমা ১০,০০০ মার্কিন ডলার (USD)। এর ফলে করদাতারা তাদের রাজ্য ও স্থানীয় কর বাবদ এই পরিমাণ অর্থ তাদের ফেডারেল ট্যাক্স থেকে বাদ দিতে পারেন.

তবে, এই সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে, যা সম্ভবত ৩০,০০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করা হতে পারে। এই প্রস্তাবের ফলে উচ্চ-আয়ের কিছু মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে কারা বেশি সুবিধা পাবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

আগে, ২০১৭ সালের আগে, এই স্যাল্ট কর্তনের কোনো সীমা ছিল না। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের সময় প্রণীত ট্যাক্স কাট অ্যান্ড জবস অ্যাক্ট (Tax Cuts and Jobs Act) এই সীমা নির্ধারণ করে।

এর ফলস্বরূপ, যারা এই সুবিধা পেতেন, তাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এই নিয়ে ভিন্নমত দেখা যাচ্ছে। সাধারণত, ডেমোক্রেট-নিয়ন্ত্রিত রাজ্যগুলি (যা ‘ব্লু স্টেট’ নামে পরিচিত) এই কর্তন বাড়ানোর পক্ষে।

কারণ, তাদের রাজ্যের বাসিন্দাদের ওপর এই নিয়মের প্রভাব বেশি। অন্যদিকে, রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত রাজ্যগুলি (যা ‘রেড স্টেট’ নামে পরিচিত) এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। তাদের যুক্তি হলো, এই ধরনের পদক্ষেপ কিছু নির্দিষ্ট রাজ্যের জন্য সুবিধা তৈরি করবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য ভালো নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কর কর্তন ব্যবস্থাটি মূলত উচ্চ-আয়ের লোকেদের বেশি সুবিধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আগে যখন কোনো সীমা ছিল না, তখন উচ্চ আয়ের করদাতারা এই সুবিধা থেকে বেশি উপকৃত হতেন।

বর্তমানে, এই সীমা নির্ধারণের ফলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-আয়ের মানুষের উপর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

মার্কিন কংগ্রেসের হিসাব অনুযায়ী, যদি এই সীমা ৩০,০০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করা হয়, তাহলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে, এর ফলে কিছু মানুষের করের বোঝা কমবে, বিশেষ করে যারা উচ্চ-আয়ের এবং উচ্চ করের রাজ্যে বসবাস করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এখনো বেশ কয়েক দফা আলোচনা ও সমঝোতা হতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে মার্কিন কর কাঠামোতে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে, যা দেশটির নাগরিকদের আর্থিক অবস্থার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *