প্রয়াত ‘মংগো’ ম্যাকমাইকেল: শোকের ছায়া, হৃদয়ে গভীর ক্ষত!

শিকাগো বিয়ার্সের কিংবদন্তি খেলোয়াড়, স্টিভ ‘মঙ্গো’ ম্যাকমাইকেল, ৬৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। ১৯৮৫ সালের সুপার বোল জয়ী দলের এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দীর্ঘদিন ধরে এএলএস (ALS) বা অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস নামক এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন।

এই খবরে ক্রীড়ামোদী এবং তার ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ম্যাকমাইকেল ১৯৮১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত শিকাগো বিয়ার্সের হয়ে টানা ১৯১টি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন, যা এখনো একটি রেকর্ড। মাঠের খেলায় তার আগ্রাসী মনোভাব এবং প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতা তাকে বিশেষভাবে পরিচিত করে তুলেছিল।

খেলোয়াড় হিসেবে তিনি যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন, তেমনি খেলার বাইরেও তার একটি উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিল।

ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর ম্যাকমাইকেল পেশাদার কুস্তি জগতে প্রবেশ করেন। সেখানেও তিনি দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন এবং দর্শকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

নব্বইয়ের দশকে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ রেসলিং (WCW)-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি কালার কমেন্টেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং পরে ‘ফোর হর্সম্যান’ নামক একটি দলে যোগ দেন।

২০২১ সালে ম্যাকমাইকেল নিজেই জানান যে তিনি এএলএস-এ আক্রান্ত হয়েছেন। এই রোগ স্নায়ু কোষের ওপর প্রভাব ফেলে এবং ধীরে ধীরে শরীরের মাংসপেশি দুর্বল করে দেয়।

মৃত্যুর আগে তিনি বলেছিলেন, “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে জীবনের এমন একটা পরিণতি হবে।”

ম্যাকমাইকেলের স্ত্রী মিস্টি ম্যাকমাইকেল জানান, তার স্বামী সবসময় লড়াকু ছিলেন এবং এই রোগের সঙ্গেও তিনি শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন।

চলতি বছরই তাকে প্রো ফুটবল হল অফ ফেইমে (Pro Football Hall of Fame) অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

স্টিফেন ‘মঙ্গো’ ম্যাকমাইকেল খেলোয়াড় হিসেবে যেমন খ্যাতিমান ছিলেন, তেমনি একজন মানুষ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। মাঠের কঠোর মানুষটি সবসময় অন্যদের সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকতেন।

খেলোয়াড়ি জীবন এবং মাঠের বাইরের জীবন, উভয় ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সকলের কাছে অনুকরণীয়।

তার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে শিকাগো বিয়ার্স এক বিবৃতিতে জানায়, “স্টিভ ‘মঙ্গো’ ম্যাকমাইকেল ছিলেন বিয়ার্সের কিংবদন্তি। এএলএসের বিরুদ্ধে তার সাহসী লড়াই আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।”

প্রো ফুটবল হল অফ ফেইমের প্রেসিডেন্ট ও সিইও জিম পোর্টার বলেন, “স্টিভ ম্যাকমাইকেল সবসময় লড়ে গেছেন, এবং তিনি সেটাই করেছেন যা তিনি ১৫ বছর ধরে ফুটবল খেলার সময় করে এসেছেন।”

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *