মৃত্যুর কাছে হার মানলেন ‘মঙ্গো’! প্রয়াত ১৯৮৫ সালের চ্যাম্পিয়ন দলের তারকা

শিকাগো বিয়ার্সের কিংবদন্তি খেলোয়াড়, স্টিভ ম্যাকমাইকেল, যিনি ১৯৮৫ সালের সুপার বোল জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন, ৬৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এএলএস (ALS) বা অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস নামক এক স্নায়ু রোগ এর সাথে যুদ্ধ করছিলেন। তার প্রয়াণে ক্রীড়া জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ম্যাকমাইকেল, যিনি “মিং দ্য মার্সিলেস” এবং “মঙ্গো” নামেও পরিচিত ছিলেন, ১৯৮৫ সালে অল-প্রো নির্বাচিত হন এবং ২০২৪ সালে প্রো ফুটবল হল অফ ফেম-এ অন্তর্ভুক্ত হন। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ছিলেন অসাধারণ, বিশেষ করে ১৯৮১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত শিকাগো বিয়ার্সের হয়ে টানা ১৯১টি ম্যাচে খেলার রেকর্ড তার ঝুলিতে রয়েছে।

ফুটবল মাঠ ছাড়ার পর ম্যাকমাইকেল পেশাদার কুস্তি জগতে নাম লেখান। নব্বইয়ের দশকে তিনি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ রেসলিং (WCW)-এর সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে তিনি ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি রিক ফ্লেয়ারের সঙ্গে “ফোর হর্সম্যান” দলে যোগ দেন। তার এই ভিন্নধর্মী জীবনযাত্রা তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।

২০২১ সালের এপ্রিলে ম্যাকমাইকেল জানান যে তিনি এএলএস রোগে আক্রান্ত। এই রোগ স্নায়ু কোষের উপর প্রভাব ফেলে এবং ধীরে ধীরে শরীরের মাংসপেশি দুর্বল করে দেয়। রোগের কারণে তিনি ধীরে ধীরে জনসম্মুখ থেকে দূরে চলে যান। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

ম্যাকমাইকেলের স্ত্রী মিস্তি ম্যাকমাইকেল, তার হল অফ ফেম অন্তর্ভুক্তির আগে বলেছিলেন, “সে মরতে ভয় পায়, অথচ তার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, ভেতরের এবং বাইরের দিক থেকে তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ।”

টেক্সাসের হিউস্টনে জন্ম নেওয়া ম্যাকমাইকেলের শৈশব খুব একটা সুখের ছিল না। তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর তিনি সৎ বাবার তত্ত্বাবধানে বড় হন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার আগ্রহ ছিল। বাস্কেটবল, বেসবল, ট্র্যাক, টেনিস এবং গল্ফের মতো খেলাতেও তিনি পারদর্শী ছিলেন।

ফুটবলে তার অসাধারণ দক্ষতার কারণে বেশ কয়েকটি কলেজ থেকে খেলার প্রস্তাব এসেছিল। টেক্সাস লংহর্নসের হয়ে খেলার আগে তিনি আলাবামাতেও খেলার সুযোগ পান। ১৯৮০ সালে নিউ ইংল্যান্ড প্যাট্রিয়টস তাকে ড্রাফট করে, তবে বেশিদিন তিনি সেখানে টিকতে পারেননি। পরবর্তীতে শিকাগো বিয়ার্সে যোগ দিয়ে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।

খেলোয়াড় হিসেবে মাঠের কঠোরতা এবং মাঠের বাইরের সাহসী জীবনযাপন ম্যাকমাইকেলকে কিংবদন্তিতে পরিণত করেছে। তার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে প্রো ফুটবল হল অফ ফেমের প্রেসিডেন্ট ও সিইও জিম পোর্টার বলেছেন, “স্টিভ ম্যাকমাইকেল এএলএসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, যেভাবে তিনি ১৫টি মরসুমে ন্যাশনাল ফুটবল লীগে খেলেছেন। তিনি ছিলেন লড়াকু এবং সাহসী।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *