শেয়ার বাজারের তলানিতে আঘাত? ইতিহাস বলছে…

**যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে অস্থিরতা: বাজারের সর্বনিম্ন সীমা কি? অতীতের অভিজ্ঞতা কি বলছে?**

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে (Share Market) বেশ অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা এখন জানতে চাইছেন, এই বাজারের কি তবে সর্বনিম্ন সীমা (bottom) তৈরি হয়েছে?

যদি তাই হয়, তাহলে বাজার কবে আবার ঘুরে দাঁড়াবে? এই বিষয়ে অতীতের কিছু ঘটনার দিকে তাকালে একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের প্রধান সূচক হলো এস&পি ৫০০ (S&P 500)। এই সূচক ফেব্রুয়ারী মাসে তার সর্বোচ্চ অবস্থানে গিয়েছিল, কিন্তু এরপরই কিছুটা পড়তে শুরু করে।

এর প্রধান কারণ হিসেবে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধকে দায়ী করা হয়। মার্চ মাস থেকে সূচকটি সংশোধনীর মধ্যে পড়ে।

সাধারণত, কোনো সূচক তার আগের সর্বোচ্চ অবস্থা থেকে ১০ শতাংশ কমলে তাকে ‘সংশোধন’ (correction) ধরা হয়। আর, যদি ২০ শতাংশ বা তার বেশি কমে, তবে তাকে ‘মন্দা বাজার’ (bear market) হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে কখন সর্বনিম্ন সীমা তৈরি হবে, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে ইতিহাসের দিকে তাকালে একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এস&পি ৫০০ সূচকটিতে এমন সংশোধনীর ঘটনা ঘটেছে ২৪ বার। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, যখন কোনো সংশোধনীর পর বাজার ‘মন্দা বাজারে’ প্রবেশ করেনি, তখন সর্বনিম্ন সীমা খুঁজে পেতে সূচকটির ১৩৩ দিন সময় লেগেছে।

আর, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বা আগের অবস্থানে ফিরতে সময় লেগেছে ১১৩ দিন।

এ বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে, যদি এপ্রিলের ৮ তারিখকে বাজারের সর্বনিম্ন বিন্দু ধরা হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারীর সর্বোচ্চ অবস্থা থেকে এখানে আসতে সময় লেগেছে মাত্র ৪৮ দিন। যা ঐতিহাসিক গড়ের চেয়ে অনেক দ্রুত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত কোনো সূচক যখন দ্রুত সংশোধনীর মধ্যে পড়ে, তখন বাজার দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায়।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান বাজারের এই পতনের পেছনে রয়েছে শ্বেত বাড়ির (White House) নীতি। যা অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি।

এপ্রিলের ৮ তারিখে এস&পি ৫০০ সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান ছিল ৪,৯৮২.৭৭ পয়েন্ট। অনেক বাজার বিশ্লেষক মনে করেন, বাজার তার সর্বনিম্ন বিন্দুকে আবার পরীক্ষা করতে পারে।

তাদের মতে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যদি বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন নিয়ে আশা তৈরি হয়, তবে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৮৭ সালের বাজারে ধসের (market crash) সময়ও এমনটা ঘটেছিল। সে সময় সূচকটি এক মাসের মধ্যে তার আগের সর্বনিম্ন অবস্থানে ফিরে গিয়েছিল।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব বাজারের ক্ষেত্রে যে এমনটা হবে, তা নাও হতে পারে।

শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার সময়ে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধারণ করা এবং একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে বিনিয়োগ করা উচিত।

দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা এখনো বিনিয়োগ শুরু করেননি, তাদের জন্য এই সময় শেয়ার বাজারে প্রবেশের একটা সুযোগ হতে পারে।

তবে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন (CNN)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *