যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে অস্থিরতা: ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে মন্দার শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে বড় ধরনের দরপতন দেখা দিয়েছে। নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর এত দ্রুত বাজারের এই খারাপ অবস্থা আধুনিক ইতিহাসে আর দেখা যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া কিছু নীতি এবং বাণিজ্য শুল্কের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাজারে দরপতনের ফলে অর্থনৈতিক মন্দা আসারও একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকেই এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। শুধু এস অ্যান্ড পি ৫০০ নয়, নাসডাক এবং রাসেল ২০০০-এর মতো সূচকগুলোতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে তা আমেরিকার অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
আগের প্রেসিডেন্টদের সময়েও বাজারের এমন খারাপ পরিস্থিতি দেখা গেছে। তবে ট্রাম্পের সময়ে এই দরপতন বিশেষভাবে উদ্বেগের কারণ।
কারণ, তিনি যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন বাজার বেশ ভালো অবস্থানে ছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি, বিশেষ করে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি বাজারের এই খারাপ অবস্থার জন্য দায়ী।
এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ভোক্তাদের মধ্যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে।
শেয়ার বাজারের এই পরিস্থিতি শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমেরিকার অর্থনীতির এই মন্দা বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একটা খারাপ প্রভাব ফেলবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যদি বাজারের এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে তা সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা অনেক মানুষের সঞ্চয় কমে যাবে।
ফলে মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে এবং তারা খরচ করতে দ্বিধা বোধ করবে।
বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাস অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার সম্ভাবনা বাড়ছে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জিডিপি-র (GDP) হারেও পতন হতে পারে, যা অর্থনীতির জন্য একটি খারাপ লক্ষণ।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে, তবুও বিশ্ব অর্থনীতির এই ধরনের পরিবর্তনগুলো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিশ্ব বাজারের এই অবস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন