আতঙ্কে কাঁপছে বাজার! দরপতনের কারণ কি?

শেয়ার বাজারে মন্দা, টানা পাঁচ সপ্তাহ পতনের পথে। শুক্রবার দিনের শুরুতেই মার্কিন শেয়ার বাজারে দরপতন দেখা গেছে, যার ফলে ওয়াল স্ট্রিট টানা পঞ্চম সপ্তাহের মতো ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এর প্রধান কারণ। শুক্রবার সকাল ১০:১৪ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮:১৪ মিনিট) ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচকটি ৪৫৩ পয়েন্ট বা ১.১ শতাংশ কমে যায়।

এস&পি ৫০০ সূচক ০.৯ শতাংশ এবং নাসডাক কম্পোজিট ০.৭ শতাংশ কমেছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, গত দুই বছরের মধ্যে এটি হবে এস&পি ৫০০ এর সবচেয়ে খারাপ সাপ্তাহিক দরপতন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে এবং ভোক্তা ও ব্যবসা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফেডারেল রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের উপরেই এখনো মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শুল্কহার কমানোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্ক, মূল্যবৃদ্ধি এবং ব্যয়ের উপর এর প্রভাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে আসছে।

নাইকি’র শেয়ারের দর ৭.৯ শতাংশ কমেছে, কারণ তারা চলতি ত্রৈমাসিকে রাজস্বের তীব্র পতনের পূর্বাভাস দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক এবং ভোক্তাদের আস্থা কমে যাওয়াকে দায়ী করেছে।

ফেডেক্স-এর শেয়ারের দর ১০ শতাংশ কমেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের আয় সামান্য কমতে পারে এবং শেয়ার প্রতি মুনাফার পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে।

আবাসন নির্মাতা লেনার-এর শেয়ারের দর ৭ শতাংশ কমেছে। তারা নতুন অর্ডারের পূর্বাভাস এবং গড় বিক্রয় মূল্যের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে। উচ্চ সুদ, মূল্যস্ফীতি এবং ভোক্তাদের আস্থা কমে যাওয়ায় আবাসন বাজার কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।

আবাসন বাজারের জন্য উচ্চ সুদের হার একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ। ফেডারেল রিজার্ভ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাদের বেঞ্চমার্ক সুদ অপরিবর্তিত রেখেছে।

তারা শুল্ক এবং অন্যান্য মার্কিন নীতির পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব পর্যালোচনা করছে। বন্ড বাজারে, ট্রেজারি ফলন সামান্য কমেছে।

১০ বছর মেয়াদী ট্রেজারির ফলন বৃহস্পতিবারের শেষের দিকের ৪.২৩ শতাংশ থেকে কমে ৪.২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, বিমান সংস্থাগুলোর শেয়ারেও বড় ধরনের পতন হয়েছে। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা কয়েক হাজার যাত্রীর ভ্রমণকে ব্যাহত করেছে।

আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এবং ডেল্টা এয়ারলাইন্সের শেয়ারের দর ২ শতাংশের বেশি কমেছে।

ইউরোপের বাজারগুলোতেও দরপতন হয়েছে। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পর ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক ০.৭ শতাংশ কমেছে।

জার্মানির ড্যাক্স সূচক ১ শতাংশ কমেছে। তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *