প্রাচীন স্টোনhenge-এ গ্রীষ্মের সূর্যের উদযাপন, ভিড় জমালেন হাজারো মানুষ।
যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক স্থান স্টোনhenge-এ শনিবার পালিত হলো গ্রীষ্মকালীন অয়নকাল। এই দিনে বছরের দীর্ঘতম সূর্যোদয় প্রত্যক্ষ করতে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন হাজারো মানুষ।
ভোর হওয়ার আগেই বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এই ঐতিহাসিক স্থানে উপস্থিত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক, ড্রুইড সম্প্রদায়ের মানুষ এবং প্রকৃতি পূজারীসহ আরও অনেকে।
শুধু তাই নয়, অনলাইনেও প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেছেন।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্টোনhenge-এর কেন্দ্রে আলোর বিচ্ছুরণ এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি করে। এই সময়ে সাধারণত দর্শনার্থীদের জন্য পাথরগুলোর কাছে যাওয়া নিষেধ থাকলেও, গ্রীষ্মের অয়নকালে এই বিশেষ সুযোগটি পাওয়া যায়।
যা এই উৎসবের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
ঐতিহাসিকদের মতে, স্টোনhenge প্রায় ৫০০০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল। এটি লন্ডনের প্রায় ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।
ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব আড়াই হাজার সালে এই স্থানে পাথরের বৃত্ত তৈরি করা হয়েছিল। স্টোনhenge নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত রয়েছে।
কেউ বলেন, এটি ডেনিশ রাজাদের রাজ্যাভিষেক-এর স্থান ছিল, আবার কারো মতে এটি ড্রুইডদের মন্দির অথবা নিরাময়ের কেন্দ্র ছিল। এমনকি, জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব রাখার জন্য একটি স্থান হিসেবেও অনেকে মনে করেন।
তবে সাধারণভাবে এটি সূর্যের গতিপথের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৈরি করা একটি মন্দির হিসেবেই পরিচিত।
এবারের গ্রীষ্মকালীন উৎসবে একদিকে যখন সকলে সূর্যের আলো উপভোগ করছিলেন, তখন যুক্তরাজ্যের কিছু অংশে তীব্র গরম অনুভূত হয়। স্টোনhenge-এর কাছে অবস্থিত সারে অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
গরমের এই তীব্রতা বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ড্রুইড এবং প্রকৃতি পূজারীরা প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, সূর্যের এই বিশেষ দিনে প্রকৃতির উদযাপন মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ধরনের উৎসব বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গেও কিছুটা মিলে যায়, যেখানে প্রকৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ দেখা যায়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে স্টোনhenge আজও সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এক আকর্ষণীয় স্থান। গ্রীষ্মের অয়নকালে এখানে মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি স্টোনহেঞ্জের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস