নিউ ইয়র্কের হাডসন ভ্যালি অঞ্চলে অবস্থিত সুবিশাল ‘স্টর্ম কিং আর্ট সেন্টার’-এর নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৯২ কোটি বাংলাদেশি টাকা) ব্যয়ে এই কেন্দ্রটির সংস্কার করা হয়েছে, যা বহির্বিশ্বে শিল্পকলার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বিশাল আকারের ভাস্কর্যগুলির জন্য সুপরিচিত এই কেন্দ্রে এখন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে, যা দর্শক-শ্রোতাদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করবে।
আর্ট সেন্টারটি মূলত একটি উন্মুক্ত স্থান, যেখানে প্রকৃতির মাঝে স্থাপন করা হয়েছে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন ভাস্কর্য। এখানে আসা দর্শনার্থীদের জন্য উন্নত শৌচাগার, টিকিট কাউন্টার এবং পার্কিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়াও, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুনরুদ্ধার এবং শিল্পকর্ম প্রদর্শনের স্থান আরও বাড়ানো হয়েছে।
১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আর্ট সেন্টারটি শুরুতে প্রায় ২৩ একর জায়গা নিয়ে গঠিত ছিল। পরবর্তীতে এর পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৮০০ একর জমির উপর বিস্তৃত হয়েছে।
এখানে আলেকজান্ডার ক্যাল্ডারের বিশাল ‘দ্য আর্চ’-এর মতো বিখ্যাত শিল্পকর্ম রয়েছে, যা দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। মার্ক ডি সুভেরোর ইস্পাতের তৈরি কাঠামো, ইসামু নোগুচির ৪০ টনের গ্রানাইটের তৈরি একটি বিশাল আকারের মূর্তি এবং অ্যান্ডি গোল্ডসওয়ার্দির তৈরি পাথরের দেওয়ালও এখানে অন্যতম আকর্ষণ।
সংস্কারের ফলে, কেন্দ্রের পরিবেশ আরও মনোরম করা হয়েছে। পুরনো কংক্রিটের রাস্তা ও পার্কিং এলাকা ভেঙে নতুন করে গাছ লাগানো হয়েছে।
এর ফলে, দর্শকদের জন্য প্রকৃতির কাছাকাছি শিল্পকর্ম উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রের পরিচালক নোরা লরেন্স জানিয়েছেন, “আমরা প্রকৃতির সঙ্গে শিল্পের মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়েছি।”
সংস্কারের অংশ হিসেবে একটি নতুন সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ভবন তৈরি করা হয়েছে। এখানে শিল্পকর্মগুলির মেরামতের ব্যবস্থা রয়েছে।
এর ফলে, বাইরের সাহায্য ছাড়াই এখানকার শিল্পকর্মগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
আর্ট সেন্টারের স্থাপত্যশৈলীতেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। নতুন টিকিট ঘরটি তৈরি করা হয়েছে একটি পুরনো কুটিরকে কেন্দ্র করে।
দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে, যা জাপানি মন্দিরের স্থাপত্য থেকে অনুপ্রাণিত। এখানকার শৌচাগারগুলিও বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা দর্শকদের জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা যোগ করবে।
এই সংস্কারের ফলে, স্টর্ম কিং আর্ট সেন্টার এখন শুধু একটি শিল্প প্রদর্শনী কেন্দ্র নয়, বরং এটি প্রকৃতির মাঝে শিল্পের এক অসাধারণ মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। যা দর্শকদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian