ভাগ্যের কি পরিহাস! ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে সারা বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরুর আগেই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হলেন অ্যাঞ্জেলা হার্সানি ও জিয়ান পেরোনি নামের এক যুগল। তাঁদের সমুদ্রযাত্রা শুরুর কথা ছিল, কিন্তু এক যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাঁদের বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজ ‘ভিলা ভি ওডিসি’ আটকা পরেছিলো উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট শহরে।
আর এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার জেরেই যেনো নতুন করে পথ চলা শুরু হয় তাঁদের ভালোবাসার। ২০২৪ সালের মে মাসে বেলফাস্ট থেকে বিশ্ব ভ্রমণে বের হওয়ার কথা ছিল অ্যাঞ্জেলা এবং জিয়ানের।
কিন্তু জাহাজের ‘রাডার’–এ সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁদের যাত্রা বাতিল হয়ে যায়। এরপর চার মাস ধরে জাহাজ মেরামতের জন্য বেলফাস্টেই থাকতে হয় তাঁদের।
এই সময়টাতেই যেনো জীবনের নতুন গল্প তৈরি হয় তাঁদের। মেরামতির সময় তাঁরা শহরের বাইরে যাতায়াত করতেন এবং একটি হোটেলে বসে অফিসের কাজ করতেন।
এই আসা-যাওয়ার পথেই তাঁদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে এই বন্ধুত্ব ভালোবাসায় রূপ নেয়।
একান্তে সময় কাটানো, একসঙ্গে শহরের আনাচে-কানাচে ঘোরাঘুরি—এভাবেই তাঁরা একে অপরের কাছে আসেন।
অবশেষে, বেলফাস্টের ‘লগান’ নদীর তীরে এক মনোরম পরিবেশে জিয়ান তাঁর ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। অ্যাঞ্জেলাও রাজি হয়ে যান।
এরপর, মেরামতির পর যখন জাহাজটি তাদের দীর্ঘ যাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়, তখন তাঁরা ঠিক করেন জাহাজের মধ্যেই বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন।
তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কোস্টারিকায় এসে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। জাহাজের ক্যাপ্টেন-এর পৌরোহিত্যে এক ছোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয়।
বিয়ের দিন, অ্যাঞ্জেলা ‘বেলফাস্ট থেকে চিরকাল’- এই কথাগুলো খোদাই করা একটি পথ ধরে হেঁটে আসেন।
পরের দিন, নবদম্পতি একটি বিশাল সংবর্ধনার আয়োজন করেন, যেখানে প্রায় ৩০০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০০ জন ছিলেন, যাঁরা বেলফাস্টে আটকা পরেছিলেন।
সমুদ্রের বুকে অস্তমিত সূর্যের আলো আর জাহাজের পাশে খেলা করা ডলফিনের দৃশ্য—সবকিছু মিলিয়ে এক জাদুকরী পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।
অ্যাঞ্জেলা জানান, এই যাত্রা তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো। তাঁদের মতে, এখন তাঁরা যেনো একটানা মধুচন্দ্রিমায় আছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল