ব্রাসেলসের সেরা খাবারে চুমুক: কোথায় খাবেন আর কোথায় পাবেন ল্যাম্বিক বিয়ার?

ব্রাসেলস: খাদ্যরসিকদের জন্য এক অসাধারণ গন্তব্য। ইউরোপের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত ব্রাসেলস, শুধু যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর বা ন্যাটোর প্রধান কার্যালয় – এই পরিচয় বহন করে, তা নয়।

বরং, এই শহর তার বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এবং রন্ধনশৈলীর জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস-এর খাদ্য জগৎ, ঐতিহ্যবাহী স্বাদের সঙ্গে আধুনিকতার এক চমৎকার মিশ্রণ। যারা ভোজনরসিক, তাদের জন্য এই শহর যেন এক স্বর্গরাজ্য।

ঐতিহ্যবাহী বেলজিয়ান খাবারের স্বাদ। ব্রাসেলস-এর খাদ্য তালিকার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ক্লাসিক বেলজিয়ান খাবার।

এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে সাধারণ উপকরণ দিয়ে তৈরি সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। স্থানীয় উপকরণ এবং তাজা সবজির ব্যবহার এই খাবারের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এখানকার ফ্লেমিশ স্টু, যা শুকরের মাংস এবং সবজি দিয়ে তৈরি করা হয়, খুবই জনপ্রিয়।

এছাড়াও, “ব্লুম্পাঞ্চ” (Brussels black pudding) এবং “ফ্রেঞ্চ ফ্রাই” (আলু ভাজা) -এর স্বাদ নিতে পারেন।

আন্তর্জাতিক খাবারের সমাহার। ব্রাসেলস-এর খাদ্য সংস্কৃতিতে আন্তর্জাতিক খাবারেরও এক বিশাল প্রভাব রয়েছে।

ইতালীয়, মেক্সিকান, কোরিয়ান, ভিয়েতনামী এবং জাপানি খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন এখানে। ইতালীয় খাবারের মধ্যে ব্রুসচেটা এবং ককটেল-এর জনপ্রিয়তা রয়েছে।

মেক্সিকান খাবারের মধ্যে টাকোস, পোলো কন মোলে এবং সেভিচের স্বাদ নিতে পারেন। কোরিয়ান ফাইন ডাইনিং, ভিয়েতনামী ফিউশন এবং জাপানি “ইজাকায়া”-র (informal Japanese izakaya) স্বাদও এখানে উপভোগ করা যায়।

ভেজিটেরিয়ান এবং ভেগান খাবারের জগৎ। যারা নিরামিষভোজী বা ভেগান খাবার পছন্দ করেন, তাদের জন্যও ব্রাসেলস-এ রয়েছে অসংখ্য বিকল্প।

“হিউমাস এক্স হর্টেনস” (Humus X Hortense)-এর মতো রেস্টুরেন্ট, যেখানে প্ল্যান্ট-বেজড ফাইন ডাইনিং পরিবেশন করা হয়, বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

মিষ্টিমুখের আয়োজন। ব্রাসেলস-এর চকোলেট এবং বিয়ার-এর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে।

এখানকার “লরেন্ট জারবো” (Laurent Gerbaud)-এর মতো চকোলেট প্রস্তুতকারকরা বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে চকোলেট তৈরি করেন। আপনি যদি বিয়ার ভালোবাসেন, তাহলে ব্রাসেলস-এর বিভিন্ন “ব্রাসেরি”-তে (brewery) স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিয়ার-এর স্বাদ নিতে পারেন।

কোথায় খাবেন। সিটি সেন্টার: এখানে “উইটামারন” (Wittameron)-এর মতো ক্যাফেতে আলুর ক্রিসেন্ট-এর স্বাদ নিতে পারেন।

এছাড়াও, “বেলজিয়ান বিয়ার ওয়ার্ল্ড” (Belgian Beer World)-এ গিয়ে বিয়ারের জাদুঘর ঘুরে আসতে পারেন। দুপুরের খাবারের জন্য “নুরদজি” (Noordzee)-তে সি-ফুডের বিভিন্ন পদ উপভোগ করতে পারেন।

চ্যাতেলাইন: এখানে “জ্যাক্কি” (Jackie)-এর মতো কফি শপে বসে কফি ও ম্যাগাজিন পড়ার সুযোগ রয়েছে। দুপুরের খাবারের জন্য “বিন্টজে” (Bintje)-তে আলু ভাজার স্বাদ নিতে পারেন।

পার্ক ও “গুয়াঙ্গেটস” (guinguettes): ব্রাসেলস-এর পার্কগুলোতে “গুয়াঙ্গেটস” (outdoor cafe-kiosk) নামক ক্যাফেতে স্থানীয় বিয়ার-এর স্বাদ উপভোগ করতে পারেন।

ব্রাসেলস-এর এই খাদ্য-অভিযান, ভোজনরসিকদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে। আপনি যদি ইউরোপ ভ্রমণে যান, তবে ব্রাসেলস-এর এই স্বাদগুলো অবশ্যই চেখে দেখা উচিত।

তথ্যসূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *