১০০০ ডিগ্রীর বেশি তাপমাত্রা: ছাত্রদের তৈরি রোবট, যা বাঁচাবে জীবন!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একদল শিক্ষার্থী মিলে তৈরি করেছে এমন এক অত্যাধুনিক রোবট, যা এক হাজার দুই’শ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে সক্ষম।

অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জীবন আরও সুরক্ষিত করতেই এই রোবট তৈরি করা হয়েছে।

ফায়ারবট (FireBot) নামের এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে ‘প্যারাডাইম রোবোটিক্স’ নামের একটি স্টার্টআপ কোম্পানি, যার প্রতিষ্ঠাতা ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের প্রকৌশল বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র সিদ্ধার্থ ঠাকুর।

ফায়ারবট মূলত এমন সব জায়গায় প্রবেশ করতে পারবে, যেখানে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

আগুনে পোড়া কোনো ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে এটি সেখানকার ছবি ও তাপমাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠাতে পারবে।

এর মাধ্যমে কর্মীরা বাইরে বসেই পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

সিদ্ধার্থ ঠাকুর জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে হিউস্টনে একটি অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ জন দমকলকর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা থেকেই তিনি এমন একটি রোবট তৈরির অনুপ্রেরণা পান।

সেই ঘটনার পর থেকেই তিনি ফায়ারফাইটারদের সুরক্ষার জন্য রোবট তৈরির বিষয়ে কাজ শুরু করেন।

ফায়ারবট তৈরি হয়েছে স্টেইনলেস স্টিল, টাংস্টেন ও টাইটানিয়াম-এর মতো অত্যন্ত শক্তিশালী উপাদান দিয়ে।

এটি প্রায় ৩০০ পাউন্ড ওজনের এবং লম্বায় প্রায় চার ফুট।

প্রচন্ড তাপ, রাসায়নিক পদার্থের আক্রমণ এবং এমনকি ছাদ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনাও এটি সহ্য করতে পারে।

এই রোবটে রয়েছে বিশেষ ক্যামেরা ও গ্যাস সেন্সর, যা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সরাসরি ছবি ও তাপমাত্রা সংক্রান্ত তথ্য পাঠাতে পারে।

ফায়ারবট এখনো উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে এবং এর ডিজাইন উন্নত করার জন্য ফায়ার ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।

পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের জন্য এটিকে টেক্সাসের অস্টিন ও রাউন্ড রকের দমকলকর্মীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এই ধরনের প্রযুক্তি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও পোশাক কারখানায় প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে কর্মীদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

ফায়ারবটের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং দ্রুততার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

এমন যন্ত্র থাকলে, আগুন লাগার পর ভবনের ভেতরে প্রবেশ না করেই বাইরে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যাবে, যা জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হবে।

ফায়ারবটের নির্মাতারা স্বপ্ন দেখেন, ভবিষ্যতে প্রতিটি অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কাছে এমন একটি রোবট থাকবে, যা তাদের জীবনকে আরও নিরাপদ করবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *