ফের ছাত্রঋণ: স্কোর কমছে? এখনই সতর্ক হোন!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ঋণ পরিশোধ আবার চালু হওয়ার পর, অনেকেরই ক্রেডিট স্কোর কমে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, কিভাবে নিজের আর্থিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়, সেই বিষয়ে কিছু জরুরি পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

যদিও এই ঘটনা সরাসরি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, তবে ঋণ পরিশোধ এবং ক্রেডিট স্কোর ব্যবস্থাপনার মূলনীতিগুলো আমাদের সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ছাত্র ঋণ পরিশোধের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন।

কিন্তু সেই স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ার পর, অনেকেই নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। এর ফলস্বরূপ, তাদের ক্রেডিট স্কোর কমতে শুরু করেছে।

ক্রেডিট স্কোর হলো একটি সংখ্যা, যা ঋণদাতাদের কাছে আপনার ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কতটুকু, সেই ধারণা দেয়।

স্কোর ভালো থাকলে, ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়া সহজ হয় এবং সুদের হারও কম থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান ক্রেডিট ব্যুরো – Experian, Equifax, এবং TransUnion – তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে এই স্কোর তৈরি করে।

সাধারণত, স্কোর ৩০০ থেকে ৮৫০ এর মধ্যে থাকে। যাদের স্কোর ৬৭০ বা তার বেশি, তাদের ‘ভালো’ স্কোর হিসেবে ধরা হয়, এবং যাদের স্কোর ৭৫০ এর বেশি, তাদের ‘অসাধারণ’ স্কোর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অন্যদিকে, ৫৮০ থেকে ৬৬৯ স্কোরের মধ্যে থাকলে তাকে ‘মোটামুটি’ এবং তার নিচে থাকলে ‘খারাপ’ স্কোর হিসেবে ধরা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ছাত্র ঋণ পরিশোধের কারণে কয়েক মিলিয়ন মানুষের ক্রেডিট স্কোরে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।

এর মূল কারণ হলো, সময় মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করা। এই পরিস্থিতিতে, আপনার ক্রেডিট স্কোর ভালো রাখতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

প্রথমত, নিয়মিতভাবে আপনার ক্রেডিট স্কোর পরীক্ষা করা উচিত। বর্তমানে অনেক ব্যাংক এবং আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী এই সুবিধা বিনামূল্যে দিয়ে থাকে।

এর মাধ্যমে আপনি আপনার স্কোর এবং তাতে আসা পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

দ্বিতীয়ত, সময় মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা অত্যন্ত জরুরি। এমনকি, সর্বনিম্ন পরিমাণ পরিশোধ করলেও তা আপনার ক্রেডিট স্কোরের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সম্ভব হলে, স্বয়ংক্রিয় পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করুন, যাতে কোনো কিস্তি মিস না হয়।

তৃতীয়ত, আপনার ক্রেডিট ব্যবহারের পরিমাণ (credit utilization) নিয়ন্ত্রণ করুন। সহজ কথায়, আপনার ক্রেডিট কার্ডের সীমা কত, এবং আপনি তার কত শতাংশ ব্যবহার করছেন, সেটাই হলো ক্রেডিট ইউটিলাইজেশন।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, আপনার ক্রেডিট ব্যবহারের পরিমাণ ৩০ শতাংশের নিচে রাখা উচিত।

এছাড়াও, ক্রেডিট স্কোর ভালো রাখতে আরও কিছু বিষয় মনে রাখতে পারেন। যেমন, পুরনো ঋণ পরিশোধের প্রমাণ রাখা এবং নতুন ঋণের জন্য ঘন ঘন আবেদন করা থেকে বিরত থাকা।

কারণ, ঋণ পাওয়ার জন্য করা আবেদন আপনার ক্রেডিট স্কোরকে সামান্য হলেও প্রভাবিত করতে পারে।

মনে রাখতে হবে, ক্রেডিট স্কোর হলো আপনার আর্থিক ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে ছাত্র ঋণের বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে, তবে এর থেকে পাওয়া শিক্ষা আমাদের সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

সময় মতো ঋণ পরিশোধ, ক্রেডিট ব্যবহারের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নিয়মিতভাবে আপনার আর্থিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা – এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করে আপনি আপনার ক্রেডিট স্কোরকে উন্নত করতে পারেন এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো আর্থিক ভিত্তি তৈরি করতে পারেন।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *