যুদ্ধ চলছে, সুদানে সেনাপ্রধানের নতুন চাল!

সুদানের ক্ষমতাধর সামরিক প্রধান, জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান, দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা কামিল ইদ্রিসকে নিয়োগ দিয়েছেন। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের মধ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

আল-জাজিরার খবর অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তের ফলে সুদানে অস্থির পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

সামরিক বাহিনীর প্রধান আল-বুরহান এবং আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর প্রধান মোহামেদ হামদান দাগালোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই চলছে। এই দুই নেতার মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধের জেরে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।

ইতোমধ্যে এই সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ।

কামিল ইদ্রিস একসময় জাতিসংঘের বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার (World Intellectual Property Organisation – WIPO) মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া, সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। এমনকি, ২০১০ সালে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের কাছে পরাজিত হন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পাশাপাশি, আল-বুরহান সার্বভৌম কাউন্সিলে আরও দুজন নারীকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁরা হলেন সালমা আবদেল জাব্বার আল-মুবরাক এবং নাওরা আবু মোহামেদ মোহামেদ তাহির।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আল-বুরহান এই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

এদিকে, আরএসএফ রাজধানী খার্তুমসহ দারফুর অঞ্চলের কিছু অংশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। উভয় পক্ষই বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে, যার ফলে মানবিক সংকট আরও বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, সংঘাতের কারণে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুদানে শান্তি ফেরানোর জন্য অবিলম্বে একটি সমঝোতায় আসা প্রয়োজন। তা না হলে, এই গৃহযুদ্ধ শুধু মানুষের জীবনহানিই ঘটাবে না, বরং দেশটির অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *