যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে কলেরা: এক সপ্তাহে ১৭২ জনের মৃত্যু।
সুদানের স্বাস্থ্য मंत्रालय জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে দেশটিতে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২,৭০০ জন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭২ জনে। দেশটির গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি এই রোগের বিস্তারকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশই রাজধানী খার্তুম রাজ্যে শনাক্ত হয়েছে। যুদ্ধের কারণে এখানকার পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করে ড্রোন হামলার কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে। গত এপ্রিল মাস থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতি এখানকার জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলেও কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। মূলত, সুদান কলেরা প্রবণ একটি দেশ। তবে যুদ্ধের কারণে এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দুর্বল হয়ে পড়েছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো। এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
চিকিৎসকদের সংগঠন জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ হাসপাতালই বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে প্রায়ই হামলা, বোমা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সুদানের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বর্তমানে একেবারে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
কলেরা একটি মারাত্মক ডায়রিয়াজনিত রোগ। দূষিত পানি বা খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে পরিষ্কার পানি, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সুদানের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশেও প্রায়ই বন্যা দেখা যায়। এর ফলে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। সুদান সংকটের এই দিকটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য অবকাঠামো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব কতখানি।
উল্লেখ্য, সুদানে চলমান এই যুদ্ধে ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই পরিস্থিতি বিশ্বে একটি বিরাট শরণার্থী ও খাদ্য সংকটের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা