সুদানের দারফুর অঞ্চলে চলমান সংঘাতে দুই শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গত কয়েকদিনে দেশটির প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)-এর হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এল ফাশের শহরের কাছে শরণার্থী শিবিরগুলোতে চালানো হামলায় এই ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, আরএসএফ সদস্যরা এল ফাশেরের কাছে অবস্থিত উম কাদাদা শহরে হামলা চালায় এবং শহরটি দখল করে নেয়। এর পরেই সেখানে ব্যাপক হত্যাকান্ড চালানো হয়।
এছাড়া, জামজাম শরণার্থী শিবিরে আরএসএফ সদস্যদের আক্রমণে সেখানকার একটি ক্লিনিকে কর্মরত ত্রাণকর্মীরাও নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, শুধুমাত্র জামজাম ও আবু শোক শরণার্থী শিবিরেই প্রায় সাত লক্ষ বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সংঘর্ষের কারণে তাদের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এছাড়া, আরএসএফ সদস্যরা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার সুদানে সংঘটিত এই সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা আরএসএফ এবং সুদানিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডেভিড ক্যামেরন আগামী মঙ্গলবার লন্ডনে সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে আরএসএফকে সমর্থন যোগানোর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রতি নিন্দা জানানোর জন্য আহ্বান জানানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সুদানে চলমান এই সংঘাত দেশটির বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেশটির উত্তর এবং পূর্বাঞ্চল, অন্যদিকে আরএসএফ দারফুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
ইতোমধ্যেই এই গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (International Rescue Committee) এটিকে ইতিহাসের বৃহত্তম মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
দারফুরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আরএসএফের এই ধরনের হামলা ভবিষ্যতে গণহত্যার দিকে মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান