কষ্ট থেকে মুক্তি: সুলিভান্স ট্রাভেলস কেন আজও সেরা?

একটি চলচ্চিত্রের গল্প যা দর্শকদের হাসাতে পারে, এমনকি কঠিন সময়েও সাহস জোগায় – এমন ছবি কি সত্যিই আছে? হ্যাঁ, আছে। আর সেই চলচ্চিত্রটি হলো প্রিস্টন স্টারজেস-এর (Preston Sturges) ১৯৪১ সালের ক্লাসিক ছবি ‘সুলিভান্স ট্রাভেলস’ (Sullivan’s Travels)।

ছবিটির প্রধান চরিত্র জন এল সুলিভান, যিনি হলিউডের একজন সফল পরিচালক। তিনি হালকা ধরনের হাস্যরসাত্মক ছবি তৈরি করতে ভালোবাসেন, তবে তাঁর স্বপ্ন একটি গভীর সামাজিক নাটক তৈরি করা। সমাজের দরিদ্র মানুষের জীবনকে বড় পর্দায় তুলে ধরার তীব্র বাসনা তাঁর।

ছবিটিতে দেখা যায়, সুলিভান তাঁর বিলাসবহুল জীবন ত্যাগ করে সাধারণ মানুষের জীবন কেমন, তা অনুভব করতে পথে নামেন।

সুলিভানের এই যাত্রা শুরুতে বেশ কৌতুকপূর্ণ ছিল। সিনেমার পর্দায় যেমনটা দেখা যায়, ট্রেনে চড়ে ঘুরে বেড়ানো, অচেনা মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া—এসবের মধ্যে একটা হালকা আমেজ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন দারিদ্র্যের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হন, তখন তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়।

ক্ষুধার জ্বালা, আশ্রয়হীনতা—এসব অনুভব করার পর তিনি বুঝতে পারেন, মানুষের জীবনে হাসিরও একটা গুরুত্ব আছে।

ছবিটির মূল বার্তা হলো, মানুষের জীবনে হাসি-ঠাট্টারও প্রয়োজন আছে। দুঃখ-কষ্টের মাঝেও আনন্দ খুঁজে নেওয়ার গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে, কঠিন সময়ে যখন মানুষ হতাশ হয়ে পরে, তখন হাসিখুশি থাকার মধ্যে অন্যরকমের একটা শক্তি পাওয়া যায়।

‘সুলিভান্স ট্রাভেলস’-এর গল্প আমাদের বর্তমান সময়ের সঙ্গেও খুব প্রাসঙ্গিক। কোভিড-১৯ অতিমারী, অর্থনৈতিক সংকট—এমন অনেক ঘটনায় জর্জরিত আজকের পৃথিবীতে এই ছবি যেন নতুন করে আমাদের মনে সাহস যোগায়। যারা হতাশায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এই সিনেমাটি একটি পথ দেখাতে পারে।

ছবিটিতে ভেরোনিকা লেক এবং জোয়েল ম্যাকক্রিয়ার অভিনয় দর্শকদের মন জয় করে। বিশেষ করে কারাগারে একটি দৃশ্যে যখন কয়েদিরা একটি কার্টুন ছবি দেখে হাসতে শুরু করে, তখন যেন গভীর হতাশার মধ্যেও আনন্দের একটি ঝলক দেখা যায়।

এই দৃশ্যটি বুঝিয়ে দেয়, সামান্য হাসিও মানুষকে কতটা স্বস্তি দিতে পারে।

‘সুলিভান্স ট্রাভেলস’ শুধু একটি বিনোদনমূলক ছবি নয়, এটি একটি গভীর বার্তা বহন করে। এটি দর্শকদের মনে করিয়ে দেয়, কঠিন সময়েও হাসি-খুশি থাকাটা জরুরি। তাই, যারা জীবনের নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ছেন, তাঁদের জন্য এই সিনেমাটি হতে পারে এক অসাধারণ সঙ্গী।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *